সম্পাদকীয়

  ২৪ জুন, ২০২০

অবহেলা নয়, সচেতনতাই কমাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি

এক সেকেন্ডের অবহেলা আমাকে-আপনাকে ফেলতে পারে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। হাত ধোয়ার ২০ সেকেন্ডের অলসতা পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর সে কারণেই বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে সচেতন হওয়া। করোনা প্রতিরোধে সবারই উচিত সরকারি নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলা। আত্মসচেতনতা ও আত্মশাসনই এখন দেশ-জাতির কল্যাণে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। সম্প্রতি এ নির্দেশনা মেনে চলার জন্য বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। একই কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞ মহল থেকে শুরু করে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

কোভিড-১৯ রোগের বিস্তার ঠেকাতে দেশের ১০ জেলার ২৭টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণার পর সেখানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত রোববার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম, বগুড়া, চুয়াডাঙ্গা, মৌলভীবাজার, নারায়ণগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, কুমিল্লা, যশোর ও মাদারীপুরের ২৭টি ‘রেড জোন’-এ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে আদেশ জারি করেছে। ‘রেড জোন’ এলাকার জন্য কিছু কিছু নির্দেশনা রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে তা পালন করে চলার নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু বাস্তবচিত্র বলছে, এ নির্দেশনা উপেক্ষিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে একটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখ না করলেই নয় যে, নির্দেশনাটি সরকারের নির্দেশনা মনে না করে আমজনতার নির্দেশনা বলে মনে করাটাই শ্রেয়। কেননা, এ রোগ মোকাবিলা করা সরকারের একার পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব নয়। সাধারণ মানুষকেও সরকারের পাশে পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার সব ধরনের অনুসঙ্গ নিয়ে দাঁড়াতে হবে। এটি একটি যুদ্ধ। গোটা দেশ আজ আক্রান্ত। এই আক্রমণ মোকাবিলায় চাই ঐক্যবদ্ধ চিন্তা এবং শতভাগ শৃঙ্খলা। যেখানে ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ মুহূর্তে যা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, ‘রেড জোন’ এলাকায় লকডাউনের বিধিনিষেধ কড়াকড়িভাবে মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও বিভিন্ন স্থানে তা মানছে না এলাকাবাসী। একদিকে দেওয়া হচ্ছে লকডাউন; অন্যদিকে ভেঙে ফেলা হচ্ছে ব্যারিকেড। প্রশাসনের সদস্যরা জনসচেতনতাসহ মানুষকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানালেও তা যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না। না মানার পেছনে অসংখ্য কারণ তারা চিহ্নিত করে বলছেন, বেঁচে থাকার জন্য জীবিকার প্রশ্নে তাদের এই আচরণ। তাদের এই যুক্তিকে অগ্রাহ্য না করেই বলতে হয়, জীবন বাঁচাতেই জীবিকা। একটি অপরটির পরিপূরক। একটিকে বাদ দিয়ে অপরটির কথা চিন্তাও করা যায় না। সুতরাং আমাদের এ দুয়ের সমন্বয়ের কথা ভাবতে হবে। ভাবতে হবে সরকার এবং দেশের প্রতিটি সচেতন নাগরিককে। যূথবদ্ধ ভাবনা, পরিকল্পনা এবং প্রতিরোধই এনে দিতে পারে সাফল্য।

দেশে করোনা সংক্রমণের আজ ১০৯তম দিন। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৮৬ জন। মৃত্যু ছাড়াল দেড় হাজার। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরো ৪৩ জন। কিছুতেই যেন কমানো যাচ্ছে না সংক্রমণের হার এবং মৃতের সংখ্যা। এখনো আমাদের হাতে প্রতিষেধক আসেনি। রোগের বিপরীতে আসেনি কোনো কার্যকর চিকিৎসা। তাই চিকিৎসা একটিই। প্রতিরোধ আমাদেরকেই করতে হবে এবং তা সচেতনতা ও জীবন শৃঙ্খলার মধ্য দিয়েই।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সম্পাদকীয়,সচেতনতা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close