সম্পাদকীয়

  ২৯ মে, ২০২০

স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার কোনো বিকল্প নেই

ঈদ শেষে ঢাকা ফিরছে মানুষ। যাওয়ার সময়ও যখন কোনো নিয়মকানুনের ধার ধারেনি। ফেরার পথেও একই অবস্থা। পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই তারা আসছেন। করোনাভাইরাসের বহুল সংক্রমণে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউনের ঘোষণা শেষ অবধি বাড়ানো হয়েছে ৩০ মে পর্যন্ত।

দুই মাস ধরে চলা এই অবরুদ্ধতার সময়কালেও অনেক মানুষকে ঘরে আটকে রাখা সম্ভব হয়নি। অকারণে, অপ্রয়োজনে মানুষ বের হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মহাসড়কে করোনা দুর্যোগে টহল দিয়েও মানুষকে ঘরে বন্দি করতে পারেনি। এবার সরকার প্রদত্ত ছুটির ঘোষণায় বার বার সতর্ক করা হয়েছে, কেউই ঢাকার বাইরে যেতে পারবে না। বিপরীতভাবে ঢাকায় আসার ব্যাপারেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু বাস্তবে আমরা দেখেছি সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র।

নিয়মভাঙ্গার অপসংস্কৃতি সব মাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। যদিও এবার চমক লাগার মতো গণপরিবহনে টিকিট বিক্রির হিড়িক ছিল না। বাস-ট্রেন-লঞ্চ, স্টিমারের কাউন্টার জনশূন্য। গণপরিবহনের বহুমাত্রিক মাধ্যমগুলো স্থবিরতার কঠিন বেড়াজালে। তবে সেটা বহু মাত্রায় দৃশ্যমান হয়েছে সড়ক-মহাসড়কে। শিকড়ের টানে গ্রামে ফেরা মানুষগুলোর অসহনীয় ভিড়ে করোনার স্বাস্থ্যঝুঁকিকে কী মাত্রায় বাড়ানো হলো সেই হিসাব তো আসবে আরো পরে।

জেলা থেকে বের হওয়া ও ঢোকার সব চেকপোস্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারিতে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। বহু মানুষকে ফিরিয়েও দেওয়া হয়েছে মাঝপথে। তবু থামানো যায়নি জনস্রোত। নদীপথে ভ্রমণের গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফেরি থেকে আরম্ভ করে স্টিমার, লঞ্চ সবকিছুর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবু ঘরমুখো মানুষ নদীপথে নৌকা, ক্ষুদ্র লঞ্চ, স্পিডবোটের মাধ্যমে পারাপার করেছে। মূল্যবান জীবনকেও বিপন্ন করতে তারা মরিয়া। সামাজিক দূরত্ব আর স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যাপারটি পদদলিত হচ্ছে প্রতিনিয়তই।

এরই মধ্যে সংক্রমণ বাড়ার লক্ষণও প্রকাশ পাচ্ছে। মানুষ যদি নিজে সচেতন না হয় তার স্বাস্থ্যসম্পদ এবং জীবনকে সুরক্ষা দিতে, সেখানে এত বড় অশনিসংকেতকে মোকাবিলা করেই আমাদের টিকে থাকতে হবে হয়তো। ঈদের ছুটি শেষে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে বিভিন্ন পথে রাজধানীমুখী মানুষের ঢল নেমেছে। দক্ষিণবঙ্গ থেকে হাজার হাজার মানুষ কর্মস্থলে ফিরছেন। ফেরিগুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে শিমুলিয়ায় আসছে। সেখানে গাড়ির সংখ্যা কম, যাত্রীর সংখ্যাই বেশি।

হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় ফিরছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই তারা আসছেন। গণপরিবহন না থাকায় ছোট গাড়ি, অটোরিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল এমনকি পিকাপে বা ট্রাকে করেও গন্তব্যে রওনা দিয়েছে অসংখ্য মানুষ। কেউ কেউ ঘাটে যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেঁটেও রওনা দেন।

কিন্তু দুঃখজনক হলো স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় এত সতর্কতা সত্ত্বেও মানুষের মধ্যে সেই সচেতনতা নেই। এতে তারা নিজেরা যেমন ঝুঁকিতে আছেন, তেমনি অন্যদেরও ঝুঁকিতে ফেলছেন। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো কঠোর হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
করোনা,স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা,করোনা সংক্রমণ,করোনা ঝুঁকি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close