সম্পাদকীয়

  ০৪ এপ্রিল, ২০২০

ডেঙ্গু প্রতিরোধেও সতর্ক থাকতে হবে

করোনা মোকাবিলার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঠেকাতেও নির্দেশনা দিয়েছেন, যা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। কারণ এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত হচ্ছে ডেঙ্গুর মৌসুম। যেহেতু এপ্রিল মাস শুরু হয়েছে। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পিক টাইমও শুরু। করোনা সংকটে ডেঙ্গু বিষয়টি অনেকটা ঢিলেঢালাভাবে চলছে। তবে পরিস্থিতি এমন হলে ডেঙ্গুর কারণে মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

সেই বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ৩০ মার্চ করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে ৬৪ জেলায় ভিডিও কনফারেন্স চলাকালে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি মশক নিধন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণেরও নির্দেশ দেন। তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশনা দেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম মশক নিধনে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় সম্মিলিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে দুই সিটি করপোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একযোগে মশক নিধন অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। শিগগির স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা নির্ধারণ করবেন বলে জানা গেছে। তবে তা যত দ্রুত শুরু হবে ততটাই মঙ্গল। কারণ এরই মধ্যে মশার কামড়ে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের খবর আসছে।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৬৬ জন। গত বছরের প্রথম তিন মাসে এ সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৩ জন। বিষয়টি উদ্বেগের। এখনই মশক নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এখনো ডেঙ্গু জ্বরের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তাই ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশে সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। তবে জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত পরিস্থিতি বেশি খারাপ থাকে। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী।

আমরা মনে করি, দুই সিটি করপোরেশন এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে টেকসই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে পারলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৃষ্টিপাত হলে এ সমস্যা আরো বাড়বে। কাজেই দেরি না করে এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে সব জায়গায় মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

এছাড়া ডেঙ্গুর প্রতিরোধে জনসচেতনতা তৈরি, ডেঙ্গুর প্রাথমিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করা, ডেঙ্গু হলে করণীয় সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করাও দরকার। যত দ্রুত সম্ভব ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস নিধন এবং এডিসের বংশ বিস্তার রোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করবে— এটাই নগরবাসীর প্রত্যাশা।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
করোনা,ডেঙ্গু,মশক নিধন,ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close