সম্পাদকীয়

  ১০ মার্চ, ২০২০

করোনায় না ঘাবড়ে সতর্ক হতে হবে

বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী রোগ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অবশেষে আমাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। তিনজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ৪০ জন রোগীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত একজন বাংলাদেশি ব্রিটেনে মারা গিয়েছেন। সিঙ্গাপুরে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্বের অন্য দেশে অবস্থানকারী বাঙালিরাও এই রোগে আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছেন। ঘনবসতির বিবেচনায় আমাদের এ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়া বেশ উদ্বেগের ব্যাপার। তবে এ ক্ষেত্রে সাহস সঞ্চয় করে যথেষ্ট প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে হবে এই সংকটময় সময়ে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের যথেষ্ট সক্ষমতা আছে। গত রোববার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, সবাই একটু সচেতন হলে ইনশাআল্লাহ এ ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করা সম্ভব। কাজেই এখানে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে সবাইকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনাগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা সারাক্ষণ মনিটর করছি। কোথাও যদি কোনো সমস্যা দেখা দেয়, যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। এ ক্ষেত্রে আমি বলব সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে। এ ছাড়া প্রতিদিনই আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে কীভাবে চলতে হবে, কীভাবে কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্য সুরক্ষার নির্দেশনাগুলো সবাইকে মেনে চলার অনুরোধ জানাচ্ছি। করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই করোনাভাইরাসের কারণে অনেক দেশ এখন অর্থনৈতিকভাবেও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।

করোনা শুধু আমাদের এ দেশের সমস্যা না, এটি এখন বিশ্বের সমস্যা। প্রাথমিকভাবে চীনে এর উৎপত্তি হলেও ক্রমেই এটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। চীনের গণ্ডি পার হয়ে করোনার বিস্তৃতি এখন সারা বিশ্বে। বিশ্বের প্রায় একশোটি দেশের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয় গেছে। চীনের পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে ইরান ও ইতালি। ইতালিফেরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেই করোনা সংক্রমণের খবর প্রকাশ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের যথেষ্ট সতর্ক থাকার অবকাশ রয়েছে। এ রোগের প্রতিষেধক যেহেতু এখনো আবিষ্কার হয়নি, সেহেতু প্রতিরোধই এর একমাত্র সমাধান। সবাইকে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেমনটি বলেছেন, তা অনুসরণ করতে হবে। সবাইকে সতর্ক হতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এই পর্যায়ে অত্যন্ত আবশ্যক। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা যথেষ্ট পরামর্শ দিচ্ছেন। ব্যক্তিপর্যায়ে এই নির্দেশনাগুলো ভালোভাবে অনুসরণ করতে হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে এর উদ্যোগ নিতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ এবং সব বয়সের নাগরিককে বিশেষজ্ঞদের এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। সরকারের নানাস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী—যারা বিশেষত বিভিন্ন বন্দরে কাজ করছেন, তাদেরও নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেতন হতে হবে।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ ধরনের প্রাণঘাতী রোগ মোকাবিলায় সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এ অবস্থায় ঘাবড়ে না গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সাহসের সঙ্গে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে করোনা মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ অনেক ধনী রাষ্ট্র না। বিশ্বের অনেক অবস্থাসম্পন্ন রাষ্ট্রও আজ করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সতর্কতাই আমাদের কাছে প্রধান অনুসরণীয় কাজ। তাহলেই আমরা করোনা মোকাবিলায় অনেকটা সক্ষম হব।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সম্পাদকীয়,করোনাভাইরাস,নির্দেশনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close