রায়হান আহমেদ তপাদার

  ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে তরুণ প্রজন্ম

একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নাম ফেসবুক। বিশ্বব্যাপী মানুষে মানুষে বন্ধনের চমকপ্রদ এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নতুন এক বিস্ময়। সহস্র মাইল দূরের মানুষটিকেও কাছে এনে দেয় মুহূর্তেই। ২০০৪ সালে যাত্রা করার পর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গকে। সাঁই সাঁই করে জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে তার প্রতিষ্ঠানের। ফেসবুকের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা বিকাশের, নিজের সুন্দর চিন্তাভাবনা অন্যের কাছে তুলে ধরার অপরিসীম সুযোগ রয়েছে।

অনেকের মতে, পুরোনো বন্ধু এবং আত্মীয়দের খুঁজে পাওয়া এবং কোনো বিশেষ ঘটনা বা উপলক্ষ সবার সঙ্গে সহজে শেয়ার করা, প্রবাসী স্বজনদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করা, বিভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ফেসবুক আমাদের সাহায্য করছে। ফেসবুকের কল্যাণে সংবাদপত্র ও মিডিয়ার আগেই ঘরে বসেই আমরা জেনে যাচ্ছি বিশ্বের খবর। সামাজিক এই যোগাযোগমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে অনেক তরুণ উদ্যোক্তা সফল হয়েছেন। ব্যবসার প্রচার-প্রসারের জন্যও অনেকেই ফেসবুককে বেছে নিচ্ছেন। মানবিক আবেদনে সাহায্য দেওয়া-নেওয়ার ক্ষেত্রেও ফেসবুক প্রশংসনীয় অবদান রাখছে। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, প্রতিটি জিনিসের ইতিবাচক-নেতিবাচক দুটি দিক রয়েছে। নিত্যদিনকার নানা কর্মকান্ড নিয়ে, প্রয়োজন কিংবা প্রয়োজন ছাড়াই হাজার হাজার পোস্ট আসছে ফেসবুকে। সত্যতা যাচাই না করেই ইস্যুর পর ইস্যু আর গুজব নিয়ে মেতে আছেন ফেসবুকবাসী। কেউ কেউ কোথায় যাচ্ছেন, কী খাচ্ছেন, কোথায় অবস্থান করছেন—এসবের ফিরিস্তি তুলে ধরে ছবিসহ ফেসবুকে পোস্ট করছেন। এতে করে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে। প্রচলিত আইন সমাজ আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য পরিপন্থি পোস্টও দেখা যায়।

ফেসবুকের কল্যাণে আজকাল আমরা সবাই বন্ধু। মা, বাবা, ভাইবোন সবাই বন্ধুর কাতারে। ভার্চুয়াল এ ফ্রেন্ড জগতে কেউ কাউকে স্পর্শ করতে পারে না। কেবল লাইক কমেন্ট করতে পারে আর খুব বেশি হলে শেয়ার করতে পারে। ফেসবুকে আমাদের তরুণ সমাজের একটি বড় অংশ ব্যস্ত থাকছে। কাজেই বলা যায়, তাদের চিন্তাভাবনার একটি বড় অংশ ফেসবুকে ব্যয় করছে। যেখানে তাদের চিন্তুাচেতনা কোনো সৃষ্টিশীল কাজে হওয়া উচিত; সেখানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিনোদনের কাজেই তাল বেশির ভাগ ব্যয় হচ্ছে। এটা উদ্বেগজনক বলেই মনে হয়। ফেসবুক ব্যবহারকারীর ৯৩ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে। বই আমাদের বড় বন্ধু হলেও আজকাল মোবাইল আর ফেসবুকই বড় বন্ধু হয়ে দাঁড়িয়েছে! এটা খুব একটা শুভ সংকেত নয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্য দিয়ে পৃথিবী এগিয়েছে। যত নতুন নতুন আবিষ্কার হচ্ছে; ততই মানুষ মানুষ থেকে মুখ ফিরিয়ে যান্ত্রিকতায় মগ্ন হচ্ছে। আমরা আজ যন্ত্রের দখলে। ২৪ ঘণ্টার একটি বড় অংশই কাটছে যন্ত্রের সঙ্গে। এই যন্ত্র ব্যবহারকারীদের অধিকাংশই তরুণ। আজকাল কিশোর তরুণদের হাতে হাতে মোবাইল ট্যাব। চোখের মণি সর্বদাই সেসব ডিজিটাল প্রযুক্তির পর্দায় স্থির হয়ে আছে। বাসে, রেলে সব জায়গাই এই এক দৃশ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়েছে। ফেসবুক, টুইটার আবেগ-অনুভূতি জানানোর সবচেয়ে বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে জনপ্রিয় ফেসবুক। কেউ একজন আত্মহত্যা করছে তার আগে সে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে দিচ্ছে। সেসব নিয়ে পরদিন পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এমনকি ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বলতেও কিছু নেই আজকাল।

প্রতিদিন অসংখ্য মেয়ের সর্বনাশ হচ্ছে এই ফেসবুকের মাধ্যমে। ব্যক্তিগত মুহূর্তগুলো ফেসবুকে আপলোডে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে আদায় করছে টাকা। আবার কেউ কেউ তা ছেড়েও দিচ্ছে। অনেক কিশোরী আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। আমাদের দেশের দৈনিকগুলোতে চোখ বোলালে এর সত্যতা মিলবে। প্রযুক্তির অন্যসব দিকের মতো এরও ভালো-মন্দ দিক রয়েছে। ঠিক অন্যসব কিছুর ব্যবহারের মতো আমরা ফেসবুকে ঝুঁকেছি। বছর দুয়েক আগেই জানা গিয়েছিল ২ কোটি ২৬ লাখ মানুষ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহার করে। উই আর সোশ্যাল ইস্যুটির তথ্যমতে, ফেসবুক ব্যবহারের দিক থেকে রাজধানী ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। ১৮ বছরের নিচে বাংলাদেশে প্রচুর ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছে এবং এসব কিশোর-কিশোরীর ফেসবুক ব্যবহার যে তাদের লেখাপড়ায় প্রভাব বিস্তার করছে, তা বলাই বাহুল্য। ফেসবুক এদের বই পড়ার আগ্রহ কমিয়ে দিচ্ছে। যে সময়টায় তাদের বই নিয়ে পড়ালেখা করার কথা, সে সময়টায় তার ফেসবুকে বা ম্যাসেঞ্জারে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত রয়েছে অথবা কোনো ছবি আপলোড করতে ব্যস্ত। অথচ ফেসবুকের মাধ্যমেও কিন্তু লেখাপড়া করা বা পাঠ্যবইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ শেয়ার করে বন্ধুদের সঙ্গে পড়া কোনো কঠিন বিষয় নয়। তবে সেটা খুব কমই হচ্ছে। ফেসবুকে রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতিফলনস্বরূপ একে অন্যের দলকে হেয় করতে গিয়ে বড় বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। পক্ষে-বিপক্ষে কাদা ছোড়াছুড়িও দেখা যায়, যা অসুস্থ মানসিকতার পরিচায়ক। ফেসবুকের অপব্যবহারের ফলে বেড়ে যাচ্ছে পরকীয়া, ধর্ষণ, হত্যা, ব্ল্যাকমেইল ও পর্নোগ্রাফি। অনেকের মতে, অশ্লীলতা প্রচার ও প্রসারের একটি ‘জনপ্রিয়’ মাধ্যমও এখন ফেসবুক।

এ ছাড়া ফেসবুক আসক্তি কারো কারো শারীরিক, মানসিক ক্ষতির কারণ হচ্ছে। তরুণ শিক্ষার্থীরা দিনের অধিকাংশ সময় ফেসবুক নিয়ে মেতে আছেন। এতে তাদের সময় ও মেধার অপচয় হচ্ছে, পরিবারের সঙ্গেও দূরত্বের সৃষ্টি হচ্ছে। ফেসবুকে কত শত অবৈধ ব্যবহারকারী রয়েছেন তার হিসাব নেই। ফেইক আইডির প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন অনেকেই। অসামাজিক কার্যকলাপ বিভিন্ন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে ফেসবুককেই দায়ী করছেন কেউ কেউ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ফেসবুক। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ফেসবুকের মাসিক সক্রিয় সদস্য দুই বিলিয়ন অর্থাৎ ২০০ কোটি। এই মাধ্যমটি ব্যবহারে যেমন উপকারিতা রয়েছে, তদ্রুপ খারাপ দিকও অনেক। অনেকের মতে, শুধু মতবিনিময়, যোগাযোগ রক্ষা, তথ্য আদান-প্রদান, তথ্য প্রচার ও প্রসারের ক্ষেত্রভূমি হিসেবে ফেসবুককে গ্রহণ করা উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেসবুক আমাদের জীবনের বড় একটি সময় কেড়ে নিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে মানুষ গড়ে এক ঘণ্টার বেশি সময় ব্যয় করছে প্রতিদিন ফেসবুক স্ট্যাটাস আপডেট, ছবি আপলোড, চ্যাটিং বা হোমপেজ ব্রাউজিং করতে। আর টিনএজরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরো বেশি জড়িয়ে পড়ছে। নাওয়া-খাওয়া, ঘুমের চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছে ফেসবুকে। ফেসবুক আসক্তি এখন একটা মারাত্মক নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকাল তরুণ প্রজন্ম একবার ফেসবুকের মধ্যে ঢুকলে আর বের হতে চায় না। এ কথা অনস্বীকার্য, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সবার হাতে হাতে পৌঁছে গেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্রাউজিং করায় বাস্তবে ইয়ং জেনারেশনে খুব একটা ক্রিয়েটিভ হচ্ছে না।

ইয়ং জেনারেশনের ভেতরে ম্যাক্সিমাম ব্যবহার করে ফেসবুক চ্যাটিং করার জন্য। এটি ক্রিয়েটিভ ইউজ নয়। তরুণদের ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে হতাশা থেকে শুরু করে ঘুম কম হওয়াসহ নানা অসুস্থতার জন্যও একে দায়ী করা হচ্ছে। কাজেই ফেসবুক ব্যবহারে প্রয়োজন সচেতনতা। আর শিশু কিংবা উঠতি বয়সিদের ফেসবুক ব্যবহারে প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা। দেশের অনলাইন ব্যবহারকারী ৭০ শতাংশ নারীই কোনো না কোনো ধরনের হয়রানির শিকার। শুধু দেশই নয়, বিশ্বজুড়ে অনলাইনে নারী হয়রানির এমন ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার নিরাপত্তা শাখার তথ্যমতে, তথ্যপ্রযুক্তি অবাধ বিচরণের কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যেমন ভূমিকা রাখছে আবার এসব মাধ্যমে নারী হয়রানির ঘটনাও বাড়ছে। পুলিশের দাবি, অভিযোগকারীদের প্রায় ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই সাইবার নিরাপত্তা ইউনিট থেকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রতিকার করা সম্ভব হচ্ছে। অনলাইনে ব্যবহারকারীর প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত হওয়া খুবই জরুরি। প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত করা হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের হয়রানি কমবে। পাশাপাশি ব্যবহারকারীদেরও নিজেদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হচ্ছে টিনএজ নারী। এ বয়সে একটি আবেগ থাকে। এ কারণে তারা তাদের বন্ধুদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবিও তুলছে। বন্ধুরা সেসব ছবি ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে তাকে হয়রানি বা ব্ল্যাকমেইল করছে।

১৮৬৭ সালে আলফ্রেড নোবেল ডায়নামাইট আবিষ্কার করেছিলেন মাটির নিচে খনিতে থাকা মূল্যবান সম্পদ উদ্ধারের জন্য, কিন্তু পরবর্তীতে এই ডায়নামাইট যুদ্ধে মানুষের প্রাণ নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা শুরু করে মানুষ। ডায়নামাইট ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী এক ধরনের বোমা। একই জিনিস মানুষের কল্যাণে ও ধ্বংসের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফেসবুকও তেমনি, এটা আপনি ভালো কাজেও ব্যবহার করতে পারেন আবার মন্দ কাজেও ব্যবহার করতে পারেন। সত্যি বলতে আমাদের দেশে স্মার্টফোন এতটাই সহজলভ্য হয়ে গেছে যে, এখন বাচ্চা থেকে শুরু করে সবার হাতে হাতেই ফোন চলে গেছে আর ফেসবুক ব্যবহার করছে। আর এই ফেসবুক মানুষের যেমন কল্যাণে আসে; ঠিক তেমনি কিছু অসাধু মানুষ এই ফেসবুককে যুদ্ধের অস্ত্র কিংবা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। দেশের মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টি করে তারা বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়িয়ে দাঙ্গা সৃষ্টির ফলে দেশ ও দশের শান্তি বিনষ্ট করছে। এ ছাড়াও অপ্রাপ্ত বয়সে, না বুঝে ফেসবুক ব্যবহারের ফলে অনেক মিথ্যাচার ছড়িয়ে পড়ে, এর ফলে সৃষ্টি হয় অপ্রীতিকর ঘটনা, যা মোটেও কাম্য নয়। আন্তর্জাতিক পেজ এবং সংবাদে বিভিন্ন ধরনের খারাপ মন্তব্য করে আমাদের দেশের সুনাম নষ্ট করছে এক জাতীয় মানুষ। এ ছাড়াও ভার্চুয়ালের রঙিন জগতে নারী বিভিন্ন ধরনের ফাঁদে পড়ে। আর এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা।

বর্তমান যুগে ইন্টারনেট আমাদের এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেটের ব্যবহার বলতে গেলে একটা বিপ্লব সাধন করেছে। প্রযুক্তির ভালো-মন্দ দুটো দিক থাকে। এর ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে ভালো-মন্দ আসলে নিজের কাছে। তাহলে কি আমরা আধুনিকতা গ্রহণ করব না? নতুন নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত হয়ে সভ্যতাকে এগিয়ে নেব না? অবশ্যই নেব। আমরা তো কোনো কাজে পিছিয়ে থাকতে পারি না। তবে চোখ-কান খোলা রেখে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।

লেখক : শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট [email protected]

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ফেসবুক,প্রযুক্তি,ইন্টারনেট,প্রজন্ম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close