সম্পাদকীয়

  ০৫ অক্টোবর, ২০১৯

আঞ্চলিক অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ

একটি সম্ভাবনার কথা। যে সম্ভাবনার সঙ্গে সত্যনিষ্ঠ বাস্তবতার রয়েছে শতভাগ যোগাযোগ। আর সেই সম্ভাবনার কথাই উচ্চারিত হয়েছে গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির হোটেল তাজ প্যালেসে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কথা উল্লেখ করে সেই সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেছেন বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে। সামিটে ৪০ দেশের ৮০০ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। আর এ অঞ্চলের হাব হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে। নিজস্ব ১৬ কোটি জনগণ ছাড়াও প্রায় ৩০০ কোটি মানুষের একটি বিশাল বাজারের যোগাযোগের পথ হতে পারে বাংলাদেশ। তিনি আরো বলেছেন, আমাদের প্রধান শক্তি হচ্ছে সামাজিক মূল্যবোধ ও মানুষের আস্থা। সমতা ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলার আকাক্সক্ষার পাশাপাশি আমাদের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রয়েছে আপমর সাধারণ মানুষের। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য সর্বোচ্চ উত্তম পরিবেশ বিরাজ করছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য আইনি সুরক্ষা, উদার রাজস্ব ব্যবস্থা, মেশিনপত্র আমদানির ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়, আনরেস্ট্রিকটেড এক্সিট পলিসি, সম্পূর্ণ বিনিয়োগ পুঁজি নিয়ে চলে যাওয়ার মতো নানা সুবিধা রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা নিশ্চিন্তে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন।

এইচএসবিসির গত বছরের পূর্বাভাসের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে ২৬তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশে রূপান্তরিত হবে। দুটি বিষয় এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর একটি হচ্ছে, আমাদের উন্মুক্ত সমাজ, ধর্মীয় সম্পৃতি, উদার মূল্যবোধ ও ধর্মনিরপেক্ষ সংস্কৃতি। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে, আমাদের মোট জনগোষ্ঠীর দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ। তাদের বেশির ভাগের বয়স ২৫ বছরের নিচে। তারা দক্ষতা অর্জন করেছে। প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন এসব তরুণ প্রতিযোগিতামূলক কাজে সংযুক্ত হতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, এ বছর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১ শতাংশের রেকর্ড ছুঁয়েছে। দেশের অর্থনীতি ২০০৯ সালের পর থেকে ১৮৮ শতাংশ বেড়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে প্রায় ২০০০ ডলার। বাংলাদেশের কৃষি এখন আর পরনির্ভর নয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিশ্বে চাল উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান এখন চতুর্থ। পাটে দ্বিতীয়, আমে চতুর্থ, শাক-সবজিতে পঞ্চম এবং মাছ উৎপাদনে চতুর্থ।

বাংলাদেশের এই উন্নতির কথা সর্বজনবিদিত। সবারই জানা। আর সেই সূত্র ধরে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট বোর্জ ব্র্যান্ডসহ সংস্থার নেতারা প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে বলেন, বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ ও দেশের প্রধানমন্ত্রী আজ রোল মডেল। আমরা মনে করি, নেতারা যা বলছেন তা শুধু কূটনৈতিক আচরণের অংশমাত্র নয়। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই তারা এ মন্তব্য করেছেন। এ কথায় এটি আমাদের অর্জন। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পর আমরা এখানে এসে পৌঁছেছি। এ অর্জনকে ধরে রাখাই এখন আমাদের লক্ষ্য। লক্ষ্য ধরে রাখতে পারলেই আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব বলেই আমাদের বিশ্বাস।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সম্পাদকীয়,অর্থনীিতি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close