সম্পাদকীয়

  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

রেল উন্নয়ন পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন হোক

সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, রেলের উন্নয়নে আসছে ৩০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান। সংবাদটি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক এবং শুভ। পূর্ব, বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের। পূর্ব প্রজন্ম অর্থাৎ আমরা এর সুফল ভোগ করতে পারব না। এর সৌন্দর্য অবলোকন করা থেকেও বঞ্চিত হব। এটা সত্য। তবে এতে কোনো দুঃখবোধ আমাদের স্পর্শ করতে পারেনি। বরং সুখানুভূতির আনন্দ করেছে আপ্লুত।

আমরা যা কিছু করি তা কেবল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করেই করে থাকি। আগামী প্রজন্ম ভালো থাকবে, শান্তিতে বসবাস করবে—এ রকম চিন্তা থেকেই এ ভাবনা। কেননা আগামী প্রজন্ম হচ্ছে পূর্ব প্রজন্মের উত্তরসূরি এবং আদরের সন্তানসম।

রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বও পূর্ব প্রজন্মের ওপর অর্পিত থাকে। বর্তমান প্রজন্মের একটি ক্ষুদ্র অংশও এর সঙ্গে যুক্ত থাকে। এদের ভাবনায় থাকে আগামী প্রজন্মের কথা। আগামী বাংলাদেশের কথা। সেই বাংলাদেশ এবং আগামী প্রজন্মের কথা মাথায় রেখেই সরকার এক মহাপরিকল্পনা করেছে। রেল সেক্টরে টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকার দীর্ঘ ৩০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন করেছে।

তথ্য মতে, মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী যেসব কাজ চলমান রয়েছে, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পদ্মা সেতু রেল লিংক, রামু হয়ে কক্সবাজার, কক্সবাজারের দোহাজারী নির্মাণ, মিয়ানমার সীমান্ত রেললাইন, খুলনা-মোংলা বন্দরের রেললাইন, বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ও অন্যান্য। উল্লিখিত প্রকল্পগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। অন্যদের মাঝে সরকার যে ৮৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে, তার সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে আঞ্চলিক রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে নেপাল, ভুটান ও ভারতের একটি অংশ। আর যেসব করিডর দিয়ে রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল তার উন্নয়ন ঘটিয়ে উন্মুক্ত করা হবে।

এ যাবত বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়নি বললে ভুল বলা হবে। প্রকৃত সত্য হলো, আয়তন ছোট হলেও ১৭ কোটি মানুষের এই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। শুধু খাদ্যেই নয়, অনেক ক্ষেত্রে আমাদের উন্নয়ন বহির্বিশ্বে বিশেষভাবে প্রশংসিত-ঈর্ষণীয়ও বটে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা এখনো তেমনভাবে উল্লম্ফন ঘটাতে পারেনি। চোখে পড়ার মতো রাস্তাঘাটের বেশ কিছু উন্নয়ন, সম্ভবত কিছুদিনের মধ্যেই দৃশ্যমান হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

এখানে একটি কথা না বললেই নয়, এ দেশে লাভের গুড় সব সময়ই পিঁপড়ায় খেয়ে যাচ্ছে। পিঁপড়ার ক্ষমতা এতটাই বেশি, তাদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে সরকারকে হোঁচট খেতে হচ্ছে। দায়ভার গিয়ে পড়ছে সরকারের কাঁধে। প্রশ্ন উঠেছে, এ দায় সরকার নেবে কেন? রাষ্ট্রের মালিক যদি জনগণ হয় আর রাষ্ট্রের পরিচালক যদি সরকার হয়; তাহলে এ দায় জনগণের কাঁধে এসেও বর্তায়। জনগণ এ দায় বহন করতে আগ্রহী নয়। তাই এর একটা সমাধান আজ সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। সরকার যদি বিষয়টি সমাধান করে সামনের দিকে এগিয়ে যায় তাহলে নিশ্চিতভাবে বলা যায় রেলের ভবিষ্যৎ ভালো। রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎও নান্দনিক হবে। আমরা জীবনের সব ক্ষেত্রে ভালোটাই পেতে চাই।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রেল,উন্নয়ন পরিকল্পনা,সম্পাদকীয়,মাস্টারপ্ল্যান
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close