নিয়মিত ভেষজ খাবারে দীর্ঘজীবী হন
জগতের সব মানুষই দীর্ঘজীবী হতে চায়। কিন্তু সময় অসময়ে নানান শারীরিক সমস্যা বাধ সাধে। হাতে ব্যথা, পায়ে ব্যথা, মাথায় ব্যথা থেকে শুরু করে চোখের সমস্যা, হার্টের সমস্যা আরও কত কী? আসলে বর্তমানে অসুস্থ হতে কোনো বয়সের দরকার পড়ে না। এখন যে কেউ সাধারণ থেকে জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন অল্প বয়সেই। আমাদের অতি আধুনিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা, পরিবেশের হঠাৎ পরিবর্তন মূল কারণ হিসেবে নির্ণয় করা হচ্ছে।
তবে, নানা রকম শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে গেলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ভেষজ খাবার রাখলে আপনার সুস্থ থাকা এবং দীর্ঘজীবী হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। এমনই কিছু ভেষজ খাবার নিয়ে আজকের আয়োজন।
আমলকি : আমলকি আমাদের শরীরে তিনটি দোষ, অর্থাৎ বায়ু, পিত্ত এবং কফের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আমলকির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে থাকা ভিটামিন সি নানারকম রোগ এবং জীবাণুর হাত থেকে আমদের রক্ষা করতে পারে।এ ছাড়াও আমলকির মধ্যে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকার কারণে অকাল বার্ধক্যের সমস্যা দূর হয়। এতে মানুষকে দীর্ঘজীবী করার উপাদান উপস্থিত রয়েছে।
আদা : আদার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকে। মনে করা হয় যে, আদাতে প্রায় ২৫ ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপস্থিত থাকে। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্টগুলি নানারকম রোগ নির্মূল করতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, হাড়ের সমস্যা এবং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারে।
এলাচ : চীনে এলাচ চায়ের বেশ কদর। কারণ ওই দেশে বিশ্বাস করা হয় যে, এলাচ চা পান করলে দীর্ঘজীবী হওয়া যায়। আদতে, এলাচ আমাদের শরীরের ভেতর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে। প্রসঙ্গত, এলাচের মধ্যে এক ধরনের তেল থাকে, যা আমাদের হজমশক্তি বাড়িয়ে তোলে, রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে, রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে এবং এনার্জি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
লবঙ্গ : লবঙ্গ হাজারো গুণে সমৃদ্ধ। যেমন এর মধ্যে জীবাণুনাশক, ছত্রাকনাশক, অ্যালার্জি নিরোধক এবং ক্ষতস্থান সারিয়ে তোলার ক্ষমতা রয়েছে। সেই কারণেই তো দৈনন্দিন জীবনে লবঙ্গের ব্যবহার খুবই অপরিহার্য। লবঙ্গের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে, যা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।
গোলমরিচ : যেকোনো রান্নাতেই এই মশলাটির ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র রান্নায় মশলা হিসাবে নয়, গোলমরিচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভেষজ গুণ ও খনিজ গুণ রয়েছে। গোলমরিচের আরো একটি গুণ আছে, এটি হলুদের সঙ্গে মিশে আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ফলে হলুদ মেশানো দুধে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়াও গোলমরিচ হজমপ্রক্রিয়া দৃঢ় করতে সাহায্য করে।
মধু : মধুর গুণ নিয়ে আলাদা কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। রূপচর্চা থেকে শুরু করে শরীরের যত্ন, সবকিছুতেই দশে দশ দেওয়া যায় মধুকে। তাই সুস্থ থাকতে প্রতিদিন মধু খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুণ উপকার পাবেন।
মৌরি : পেটের যেকোনো সমস্যা দূর করতে মৌরি দারুণ কাজে দেয়। মৌরিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফাইবার থাকে। সেই সঙ্গে এই প্রকৃতিক উপাদানটি পাচকরস তৈরি হতে সাহায্য করে এবং স্নায়ুকে ঠিক মতো কাজ করতে সাহায্য করে। বলা হয় যে মৌরি সারারাত পানিতে ভিজিয়ে, সেই পানি সকালে পান করলে হজমশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সারাদিন খুব ভালো ভাবে থাকা যায়।
পিডিএসও/তাজ