reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

বিরিয়ানির সঙ্গে লাল শালুর প্রেমের আসল রহস্য...

শাহী খাবার হিসেবে পরিচিত বিরিয়ানি এবং লাল শালুর মধ্যে রয়েছে গভীর প্রেম। প্রকৃতপক্ষে এই বিরিয়ানি মোগলাই খাবার হলেও বেশিরভাগ বাঙালিরই প্রথম পছন্দ। অবশ্য এই বিরিয়ানির প্রথম প্রচলন হয় দিল্লি এবং লখনউতে, মোগলাই এবং অওধি ক্যুইজিন হিসেবে। কিন্তু বাঙালির মন জয় করতে এই পদের বেশি সময় লাগেনি। আর এখন তো বাংলাদেশের মফস্বল হোক কি ভারতের শহর কলকাতা- বিরিয়ানির দোকান সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। একটা বড় হাঁড়ি, তার গায়ে একটা লাল শালু জড়ানো। এটুকু থাকলেই যথেষ্ট। ওটাই বিরিয়ানিপ্রেমীদের আসল সিগন্যাল। লাল শালু দেখে বিরিয়ানিপ্রেমীরা স্পেনীয় ষাঁড়ের মতো দৌড়াবেন, এমনটাই কি ভাবেন পরিবেশকরা!

চিকেন বিরিয়ানি, মটন বিরিয়ানি, আন্ডা বিরিয়ানি, আলু বিরিয়ানি বা ভেজ বিরিয়ানি- এই রকম নান প্রকারভেদ রয়েছে পছন্দ অনুযায়ী। তবে কোনদিন কী ভেবে দেখেছেন, কেন বিরিয়ানির ডেকচি লাল-কাপড়ে ঢাকা থাকে? আসুন, একটু সহজভাবে চিন্তা করুন, বিদেশী অতিথি যখন আসেন তখন তাকে কেন লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়? নীল বা হলুদ নয় কেন? এই যে এত মাজার, উরস হচ্ছে সেখানে বাঁশের মাথায় লাল শালুর পতাকা ঝোলে কেন? বিরিয়ানি, হালিমের ডেগেই বা লাল কাপড় কেন? কালো বা চকমকে মখমল বা দামি কারুকাজ কাপড়ও তো ব্যবহার করা যায়? পান ও পনিরওয়ালারাও এই লাল শালু ব্যবহার করেন কেন?

কারণ, মানুষের ভাষার মতো রংয়েরও কিন্তু ভাষা আছে। আপনার চিন্তায়ও কিন্তু রং প্রভাব রাখে। তাই নয় কি? তেমনি পৃথিবীর প্রত্যেক দেশেই রংয়ের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ ও ব্যবহার রয়েছে। পতাকাগুলো দেখুন, বেশির ভাগ ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর পতাকার রঙ সবুজ ও সাদা। কেন? কারণ সবুজকে শান্তি আর সাদাকে স্বচ্ছন্দতা ও শুদ্ধতার প্রতীক বলে মানা হয়। তেমনই লাল রংয়ের ব্যবহার একেক দেশে ভিন্ন ভিন্ন। কোন দেশে লাল শৌর্য, আক্রমণ, বিপদ অর্থে ব্যবহার হয়। যেমন, যুদ্ধে লাল নিশানা সৈন্যদের নির্দেশনা দান করত শত্রুর মোকাবিলায়। আবার দেখুন ট্রেনের বা রাস্তার সিগনাল।

শুধু কি তাই! মাঠে ফুটবল রেফারীও কিন্তু প্রথমে সতর্কতা হিসাবে হলুদ পরে বিপদজনক আচরণের জন্য লাল কার্ড ব্যবহার করেন। তবে লাল রংকে সাধারণত ধরা হয় সৌভাগ্য, উষ্ণতার, আনন্দ-উৎসব ও ভালবাসার আবেগের প্রতীক হিসেবে। হৃদয়ের রং কী? শুধু তাই নয়, উষ্ণ অভ্যর্থনা প্রকাশের ক্ষেত্রেও হৃদয়ের লাল রং ব্যবহার হয়।

আসলে গোড়ার দিকের মুঘল শাসকরা ছিলেন পারস্য সংস্কৃতি প্রভাবিত। তারা তাদের জীবনে এই ধারা অনুকরণ করতেন। সম্রাট হুমায়ুন হলেন এর পথপ্রদর্শক। কারণ তিনি যখন রাজ্য হারিয়ে ইরানে আশ্রয় নিয়েছিলেন তখন তাকে পারস্য সম্রাট সেই লালগালিচার উষ্ণ অভ্যর্থনাই দিয়েছিলেন। আর খাদ্য পরিবেশনে দরবারি রীতিগুলোতে বিশেষত্ব, রূপোলি পাত্রের খাবারগুলোর জন্য লাল কাপড় আর ধাতব ও চিনামাটির জন্য সাদা কাপড় দিয়ে ডেকে নিয়ে আসা হতো। মুঘলরাও তাদেরর দরবারে সেই রীতি চালু করেন। শুধু তাই নয় সম্মানিত ব্যক্তি বা আধ্যাত্মিক সাধকদের জন্য ছিল লাল পাগড়ির ব্যবস্থাও। প্রকৃত পক্ষে সেই থেকেই লাল’র আকর্ষণ।

পিডিএসও/মুস্তাফিজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
লাল শালু,বিরিয়ানি,আসল রহস্য
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist