প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২৯ এপ্রিল, ২০২০

উপসর্গ না থাকলেও হতে পারে করোনা

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দিন দিনই বাড়ছে। এমতাবস্থায় উপসর্গ দেখা দিলেই এখন পরীক্ষা করা উচিত, কিন্তু অনেক সময় কারো কারো ক্ষেত্রে উপসর্গই দেখা যায় না। আবার কারো ক্ষেত্রে উপসর্গ থাকলেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ছে না। সব মিলিয়ে করোনাভাইরাস নিয়ে নানাজনের মনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। এ রকম পরিস্থিতিতে উপসর্গহীন করোনা সংক্রমণ এবং উপসর্গযুক্ত সংক্রমণে আসলে করণীয় কী?

করোনা মানেই কি মৃত্যু অবধারিত : করোনাভাইরাস সংক্রমণ মানেই মৃত্যু অবধারিত—বিষয়টি মোটেই তা নয়। শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ রোগীই মৃদু সংক্রমণে ভুগে থাকেন। এর জন্য তেমন কোনো চিকিৎসারও দরকার হয় না। নিজে থেকেই তারা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন। শতকরা ১০ থেকে ১৫ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে সংক্রমণ মাঝারি আকার ধারণ করতে পারে। যার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন পড়তে পারে। এ ধরনের রোগীরাও বেশির ভাগই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেন।

শতকরা ৫ থেকে ১০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। যার জন্য ভেন্টিলেটর সাপোর্টের প্রয়োজন হতে পারে। এ ধরনের রোগীরাও অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠেন এবং শতকরা ছয় থেকে সাতজন রোগী মৃত্যুবরণ করতে পারেন। বয়স্ক ব্যক্তি, যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল, যারা ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, হাঁপানির মতো রোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন; তারা আরো বেশি ঝুঁকির মাঝে অবস্থান করেন।

উপসর্গ নেই, তবু করোনা হতে পারে?

করোনা সংক্রমিত ৮০ শতাংশ রোগীর উপসর্গ থাকে খুবই মৃদু, সাধারণ সর্দি-জ্বরের মতো। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসির তথ্যমতে, ২৫ শতাংশ রোগীর আদৌ কোনো উপসর্গই থাকে না। এ ধরনের রোগী নিজের অজান্তেই আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠছেন। তবে তারা চারপাশে সংক্রমণ ছড়াতে ভূমিকা রাখছেন। এই দলে শিশু-কিশোরদের সংখ্যাই বেশি।

রোগীদের একটা অংশ আবার প্রি-সিম্পটোমেটিক। মানে তাদের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে একটু দেরিতে, কিন্তু তার আগেই ভাইরাস ছড়াতে শুরু করেন তারা। কাজেই জ্বর-কাশি না থাকলেও যে আপনি বা আপনার চারপাশের সবাই নিরাপদ ও করোনামুক্ত, তা কিন্তু নয়। এ ক্ষেত্রে পরামর্শ হলো, যতদিন লকডাউন চালু থাকে; ততদিন আলাদা ঘরে থাকুন, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলুন, মাস্ক পরুন। সঙ্গে কোনো জনসমাগম স্থান এড়িয়ে চলুন এবং যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, যেখানে সেখানে কফ-থুথু ফেলবেন না।

উপসর্গ আছে, কিন্তু নেগেটিভ হলে করণীয় কী?

করোনা নির্ণয়ের জন্য যে আরটি পিসিআর পরীক্ষা করা হয়, তা ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে ফলস নেগেটিভ রিপোর্ট দিতে পারে। নমুনা সংগ্রহের সময় অসতর্কতা, শরীরে ভাইরাল লোড (জীবাণুর সংখ্যা) কম থাকা বা সঠিক সময়ে পরীক্ষা না করার কারণে এমনটা হয়। এর সমাধান হলো রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও সতর্কতা অবলম্বন করে ১৪ দিন আইসোলেশনে (সঙ্গনিরোধ) থাকতে হবে। উল্লিখিত সব যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কাশি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি থাকলে বুকের সিটিস্ক্যান একটি বিকল্প পরীক্ষা, যা ক্ষেত্রবিশেষে ৯৭ শতাংশ নিশ্চিত করে বলে দিতে পারে করোনার সংক্রমণ হয়েছে কিনা।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
করোনা,করোনা উপসর্গ,করোনা লক্ষণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close