নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ছাদবাগান মানেই মশার প্রজননক্ষেত্র নয়

বাড়ির ছাদবাগান করতে আগ্রহীদের সংখ্যা বাড়ছে। তবে এবার ডেঙ্গু পরিস্থিতির কারণে অনেকে ছাদবাগানকে নিরাপদ মনে করছেন না। তবে ছাদবাগান মাত্রই এডিস মশার প্রজননক্ষেত্র নয় বরং কয়েকটি সহজ বিষয় মেনে চললেই ছাদে বা বাড়ির বারান্দায় নিরাপদ বাগান করা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তারের পর থেকেই বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় তৈরি করা বাগান বা টবে লাগানো গাছগুলো নিয়ে দ্বিধায় নগরবাসী। কোথাও প্রশাসনের উদ্যোগে, আবার কোথাও বাড়ির মালিকরা নিয়েই এসব বাগান ধ্বংস করছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো সমাধান।

গ্রিন সেভার্স নামের একটি সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা শহরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণদের যুক্ত করে প্রায় ৫ হাজার ছাদবাগান তৈরি করেছেন। গ্রিন সেভার্স সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আহসান রনি সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে নির্বিচারে ছাদবাগান ধ্বংস করার পেছনে অজ্ঞতা এবং সচেতনতাকে দায়ী করছেন।

আহসান রনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে বাগান তৈরি করলে সেটি মশার প্রজননের কারণ হতে পারে না। এডিস মশা জন্ম নেয় কমপক্ষে তিন দিনের জমে থাকা পানিতে। কিন্তু জীবিত গাছের শেকড়ের আশপাশে পানি জমে থাকার সম্ভাবনাই নেই।

গ্রিন সেভার্স সভাপতি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে ছাদে বাগান বা চাষ করার পরিমাণ বাড়ছে। এটি একটি শুভ উদ্যোগ। কারণ ক্রমেই সবুজ প্রকৃতি কমতে থাকা নগর সভ্যতার এই সময়ে নগরের দূষণ ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রকৃতিকে সবুজ করার বিকল্প নেই। বিশেষত ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত হতে থাকা ঢাকা শহরের প্রকৃতিতে সবুজায়ন বাড়াতে ছাদ কৃষি বেশ ভালো উদ্যোগ।

সাম্প্রতিক সময়ের ডেঙ্গুর ভয়ে নির্বিচারে এবং অসচেতনভাবে বেশ শ্রমসাধ্য এবং স্বেচ্ছাশ্রমে গড়ে উঠা ছাদের সবুজায়ন ধ্বংসে মেতে উঠা ঠিক হচ্ছে না বলে আক্ষেপ করেন আহসান রনি। কয়েকটি বিষয় মেনে চললেই ছাদের বা বারান্দার বাগানকে নিরাপদ রাখা যায়।

টবের নিচে ছিদ্র দিয়ে জমে থাকা পানি নির্গমনের সুযোগ রাখা। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে এ ধরনের পানি জমলেও সেটা নির্গমন হতে পারে অন্যথায় যদি সামান্য বা টবের ওপরে কিছু পানি জমেও থাকে সেটা ২ ঘণ্টার মধ্যে গাছ শুষে নেয়। তবে টবের নিচের এই ছিদ্র বন্ধ হয়ে গেছে কি না তা কিছুদিন পর পর পরীক্ষা করে দেখা দরকার। লেমন গ্লাস, গাঁদা, পুদিনা, ল্যাভেন্ডার, রসুন, তুলসি, রোজমেরি ইত্যাদি গাছ মশা প্রতিরোধী। বাগানে এসব গাছের চাষ করলে তা মশা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, আমিও মনে করি মশার বিস্তারের জন্য ছাদবাগান বা ছাদ কৃষি দায়ী নয়। বরং ছাদ বাগান নগরবাসীর জন্য বেশ ভালো একটা উদ্যোগ। যারাই এটা করছে সেটা বেশ ভালো একটা পদক্ষেপ। খেয়াল রাখা উচিত বাগানে যাতে পানি না জমে থাকে। বাগানের দিকে খেয়াল রাখলে এটা কোনো ঝুঁকির কারণ হতে পারে না।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ছাদবাগান,মশার প্রজননন,ডেঙ্গু পরিস্থিতি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close