শাকিল মাহমুদ বাচ্চু, উজিরপুর (বরিশাল)

  ২৬ আগস্ট, ২০১৯

শাপলার স্বর্গরাজ্য সাতলা বিল

নানা রঙের শাপলার অনাবিল সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়েছে সাতলা বিলে। সূর্যের আভাকেও যেন হার মানিয়েছে বিলের পানিতে ভেসে থাকা লতাপাতা গুল্মে ভরা শত সহস্র লাল, নীল ও সাদা শাপলা। এ যেন প্রকৃতির বুকে এক নকশিকাঁথা অপরূপ সৌন্দর্য।

বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় অপরূপ শোভার বিলটি এখন পর্যটকদের দৃষ্টি কাড়তে শুরু করেছে। দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু আসছেন সাতলা বিলের সৌন্দর্যে অবগাহন করতে।

অপরূপ শোভার সাতলা বিলে বর্ষার শুরু থেকেই ফুটতে শুরু করেছিল শাপলা। বছরের সাত মাস ধরে শত শত একর জমির পানির মধ্যে জন্ম নেওয়া নানা রঙের অজস্র শাপলা এক নজর দেখার জন্য সকাল-দুপুর-সন্ধ্যায় হাজারো মানুষ ভিড় জমাচ্ছে সাতলা বিলে। পর্যটকদের আনাগোনায় দিন দিন মুখর হচ্ছে শাপলার রাজ্য সাতলা এলাকা।

সাতলা বিলের শুরু সৌন্দর্যই নয়, শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন স্থানীয় স্বল্প আয়ের মানুষ। তারা সকালের সূর্যের আলো ফোটার আগেই ছোট ছোট নৌকা নিয়ে নেমে পড়েন শাপলা তোলার জন্য। প্রায় ২০০ বছর ধরে সাতলা বিলে জন্ম নিচ্ছে শাপলা। ওই এলাকার প্রায় ৫০ ভাগ মানুষ সাতলার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সাতলা বিল এলাকায় দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের সুবিধার্থে আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ সিকদার বাচ্চু সাতলার শাপলা বিলের সৌন্দর্র্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের জন্য কালবিলা এলাকায় একটি ছোট্ট পরিসরে আবাসন নির্মাণের স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, সাতলা দিনে দিনে পর্যটক নগরীতে পরিণত হচ্ছে। সাতলা বিলকে পরিপূর্ণ পর্যটক স্পট হিসেবে রূপ দিতে নানামুখী কার্যক্রম শুরু করেছে উপজেলা প্রশাসন।

সাতলার ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল খালেক আজাদ জানিয়েছেন, এক সময় শাপলার তেমন চাহিদা না থাকায় পানিতে জন্মে পানিতেই মরে পচতে হতো। দিনে দিনে শাপলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা বাজারে বিক্রি করে জীবিকার পথ বেছে নিয়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ। এখন প্রায় সারা বছর ধরেই শাপলা পাওয়া যায়। বরিশালের মানুষ খাদ্যের তালিকায় রাখছে শাপলা। এছাড়া সাতলার বুকজুড়ে শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে সব শ্রেণির মানুষ ভিড় করছে।

শাপলা তোলার কাজে জড়িত দিনমজুর বেলায়েত বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে চলছে তার সংসার। প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা আয় হয়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিনোদন ও প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে নানা সামগ্রী বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশেষত বর্ষা, শরৎ ও হেমন্তকালে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সাতলার শাপলা বিলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্র্য উপভোগ করছেন।

ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক সুমান্ত বলেছেন, তিনি প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঢাকা থেকে এত দূরে ছুটে এসেছেন। অপর একজন ভ্রমণপিপাসু বরগুনার আমতলীর সুমন। তিনি বলেনম শাপলা বিলের অপরূপ সৌন্দর্যে তিনি মুগ্ধ।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উজিরপুর,সাতলা বিল,শাপলা ফুল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close