শিশুরা কলমকে ভুলে যাচ্ছে!
ডিজিটাল যুগে শিশুদের স্বভাব বদলে যাচ্ছে। একসময় যে বয়সের শিশুরা লেগো দিয়ে খেলত, এখন তারা খেলছে আইপ্যাডে। আইপ্যাডের মতো ডিজিটাল যন্ত্রের প্রতি শিশুদের আসক্তিতে ব্যস্ত বাবা-মায়েদের অনেক সুবিধা হচ্ছে। ডিজিটাল যন্ত্রপাতি নাড়াচাড়া করে শিশুদের সাড়া দেওয়ার অনুভূতিও ক্ষুরধার হচ্ছে হয়তো, কিন্তু লেখার জন্য আঙুলের পেশি নিয়ন্ত্রণের যে সূক্ষ্ণ দক্ষতা দরকার তা কি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে?
ইংল্যান্ডে শিশুদের থেরাপি বিষয়ে একজন নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞ স্যালি পেইন তার পর্যবেক্ষণে দেখেছেন ডিজিটাল যুগের শিশুদের সেই দক্ষতা নষ্ট হচ্ছে। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, স্কুলে ঢোকার পর শিশুদের হাতে যখন পেন্সিল দেওয়া হচ্ছে, তারা তা ঠিকমতো ধরতে পারছে না, কারণ সেটিকে ব্যবহারের জন্য মৌলিক যে দক্ষতা দরকার তা তাদের নেই। পেন্সিল ধরে সেটাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে কাজে লাগানোর জন্য হাতের আঙুলের সূক্ষ্ণ পেশিগুলোর ওপর শক্ত নিয়ন্ত্রণ লাগে। সেই দক্ষতা অর্জনে অনেক অনুশীলন ও সুযোগ দরকার।
স্যালি পেইন বলেন, ডিজিটাল ট্যাব ও স্মার্টফোন ব্যবহারের অবাধ সুযোগ পেয়ে শিশুদের মধ্যে কলম বা পেন্সিল ধরার এবং তা ব্যবহারের ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ব্লক দিয়ে বিল্ডিং বানানোর মতো খেলা, দড়ি বা ইলাস্টিক টানতে হয় এমন ধরনের খেলনা ব্যবহারে শিশুদের সেই পেশি ব্যবহারের ক্ষমতা তৈরি হয়। আইপ্যাড ব্যবহারে তা হয় না।
ব্রিটেনে যোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফকমের হিসাবে দেশের অর্ধেকেরও বেশি পরিবারে ডিজিটাল ট্যাবলেট এবং অন্তত ৭৬ শতাংশ পরিবারে স্মার্টফোন রয়েছে। হাতের লেখার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে এমন একটি সংস্থার সঙ্গে কাজ করেন ড. জেন মেডওয়েল। তিনি বলেন, ঘরে ঘরে ডিজিটাল যন্ত্রের উপস্থিতি যত বাড়ছে, শিশুদের মধ্যে পেন্সিলের ব্যবহার তত কমছে। একসময় শিশুরা দেখত- তার বাবা-মা কলম দিয়ে বাজারের ফর্দ লিখছেন, এখন তারা দেখে বাবা-মা মোবাইল ফোনে টেক্সট করছেন। ফলে শিশুদের প্রথম শিক্ষার ধারাও বদলে গেছে। সূত্র : বিবিসি
পিডিএসও/তাজ