প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
কীভাবে রাগ কমাবেন
আপনি কি খুব বেশি রেগে যান? রেগে গেলে ভাঙচুর করেন? কিংবা হাতের কাছে যা পান ছুড়ে মারেন, গলা ফাটিয়ে চেঁচামেচি করেন বা হুমকি দেন— এমন রাগ নাকি নিয়ন্ত্রণ করাই উচিত। কিন্তু কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি কর্মশালায় গতকাল শনিবার জড়ো হয়েছিলেন এমন কিছু মানুষ যারা রাগ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে এসেছেন। রেগে গেলে কে কীভাবে তার প্রতিক্রিয়া জানান সেটি নিয়ে আলাপ হচ্ছিল।
তাদের একজন বলেন, ‘রাগ উঠলে আমি খুবই চিল্লাচিল্লি করি। আশপাশে ভাঙার মতো কিছু পেলে ভাঙাভাঙি করি। কথা বলা বন্ধ করে দেই। আমাকে দেখলে বোঝা যাবে না এমন রাগতে পারি।’ রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম, অতিরিক্ত গাড়ির হর্ন, বাসের কন্ডাকটরের আচরণ, রেস্টুরেন্টের ওয়েটারের দেরিতে খাবার দেয়া, এমন অনেক কিছুতেই ইদানীং খুব রেগে যান এমন একজন আবদুল্লাহ রেজওয়ান। তিনি বলেন, ‘ইদানীং হুট করে খুব রাগ হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে রাগ হয়ে যাওয়ার পর এবং রাগারাগি করার পর বুঝেতে পারি যে আমার তা উচিত হয়নি।’
মনোবিজ্ঞানীরা যদিও বলছেন রাগ একটি স্বাভাবিক আবেগ। কিন্তু এই রাগ ক্ষতির কারণ হয়েও দেখা দিতে পারে। তার প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিজীবন, সামাজিক ও পেশাগত জীবনে। এমনকি স্বাস্থ্যের ওপরও রাগের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ভাঙতে পারে পারিবারিক জীবনও।
কর্মশালাটির আয়োজক আর্ক নামের একটি মনোচিকিৎসা কেন্দ্রের মনোবিজ্ঞানী মধুরিমা সাহা হিয়া বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মানুষের সহনশীলতা কমছে, আর রাগের বহিঃপ্রকাশ আগের থেকে অনেক বেশি বেড়ে গেছে।
তিনি বলছেন, ‘প্রতিদিন কিন্তু রাস্তায় বের হলেই অন্তত দুই থেকে তিনটা ঝগড়া দেখি। যেমন— ধরুন, রিকশাওয়ালার সঙ্গে যাত্রীর, এক বাসের সঙ্গে আরেক বাসের চালকের, ফেরিওয়ালার সঙ্গে ক্রেতার। প্রতিদিনই কিন্তু আমরা ঝগড়া দেখছি। আমাদের অবজারভেশন বলে আমাদের ধৈর্য কমছে আর রাগ বাড়ছে।’
মনোবিজ্ঞানী মধুরিমা সাহা চারটি সহজ টিপস দিলেন। তার মতে, তাৎক্ষণিক কিছু কাজ আমরা করতে পারি, যেমন- যে জায়গাটিতে রেগে যাওয়ার মতো কিছু ঘটেছে সেখান থেকে সরে যাওয়া। যার ওপরে রাগ হয়েছে—তার কাছ থেকে সরে যাওয়া। তার সঙ্গে তখনই নয় বরং খানিক পরে কথা বলা। হাতের কাছে যদি বরফ থাকে তাহলে তা হাত দিয়ে ধরে থাকা। বরফ মেজাজ শীতল করতেও সহায়তা করে।
যদি সম্ভব হয় যে কাপড়ে আছেন তাতেই গোসল করে ফেলুন। নিঃশ্বাসের একটি ব্যায়াম করে দেখতে পারেন। সেটি করার পদ্ধতি হলো, রাগ থেকে মনটাকে সরিয়ে নিঃশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেয়া। বুক ভরে গভীর নিঃশ্বাস নেয়া, সেটাকে কিছুক্ষণ ধরে থাকা, কিছুক্ষণ পর বাতাস ছেড়ে দেয়া। সেটি রাগ কমাতে সাহায্য করে। হয়ত এর সবই আপনার কাজে নাও আসতে পারে কিন্তু চেষ্টা করে দেখতে তো আর সমস্যা নেই, বলছেন মধুরিমা সাহা।
পিডিএসও/তাজ