সংসদে ষোড়শ সংশোধনীর রায় বাতিলের নোটিশ
জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের রায় বাতিলের দাবিতে একটি নোটিশ উত্থাপন করা হয়েছে। এতে একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতির অপ্রাসঙ্গিক পর্যবেক্ষণ বাতিলেরও দাবি জানানো হয়েছে। জাতীয় সংসদে দীর্ঘ আলোচনা শেষে নোটিশটি সংসদে গ্রহণ করা হতে পারে। আজ বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে মইনউদ্দীন খান বাদল কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ (১) বিধি অনুযায়ী প্রস্তাব সাধারণ উত্থাপন করেন। উত্থাপিত প্রস্তাবে বলা হয়- সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মামলার রায়ে ষোড়শ সংশোধনীতে ‘আল্ট্রা ভাইরাস’ ঘোষণা বাতিল ও প্রধান বিচারপতি কর্তৃক জাতীয় সংসদ সম্পর্কে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যে অসাংবিধানিক, আপত্তিকর ও অপ্রাসঙ্গিক পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে তা বাতিল করতে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
বাদল বলেন, রায়ের মধ্য দিয়ে প্রধান বিচারপতি তার চেহারাটা উন্মোচন করেছেন। যেটা আমাদের জনগণকে অনেক দুঃখ দেবে। আপনারা সামরিক আইনকে অবৈধ বলছেন আবার সামরিক আইনের গর্বে জন্ম নেওয়া জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে রাখতে চাচ্ছেন। কোন অধিকার বলে ৯৬ অনুচ্ছেদ বাতিল করেছেন? এই সংসদে অনেক সদস্যই রয়েছেন, যারা সারাজীবন বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করেছেন। আপনি (প্রধান বিচারপতি) সংসদকে অপরিপক্ক বলেছেন। পরিপক্ক প্রধান বিচারপতি আপনার বোঝা উচিত এই সংসদ তার যে সীমারেখা তা অতিক্রম করেনি।
নোটিশে বলা হয়, ষোড়শ সংশোধনী সংক্রান্ত রায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা তার পর্যবেক্ষণে অনেক অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে অপ্রয়োজনীয় অবাঞ্ছিত বক্তব্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের সংসদ সদস্যদের অপরিপক্ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই বিষয়টি নিয়ে এমনভাবে আলোচনা গুঞ্জন চলছে, যা সমগ্র জাতির জন্য বাঞ্ছনীয় নয়। আমরা বিশ্বাস করি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চাদর (দ্যা ফেবরিক অব ডেমক্রেসি) সৃষ্টি হয়েছে সংসদ, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের সমন্বয়ে যাতে সংবাদপত্র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। আমাদের সংবিধানের ৭(১) বিধিতে পরিষ্কারভাবে বলা আছে ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং জনগণের পক্ষে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বের কার্যকর হবে।
সংবিধানের একটি ধারা তুলে ধরে উত্থাপিত নোটিশে বলা হয়- জনগণের অভিপ্রায়ে পরম অভিব্যক্তিরূপে এই সংবিধান প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এবং অন্য কোনো আইন যদি এই সংবিধানের সাথে অসামঞ্জস্য হয় তাহলে, সেই আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ ততখানি বাতিল হবে। সংসদে ব্যাপক আলোচনার নিরিখে এই সমস্যার অবসান চায়। তাতে করে গণবিরোধী শক্তির ঘোলা জলে মাছ শিকার প্রচেষ্টা গুড়িয়ে যায়। প্রসঙ্গত এই নোটিশ নিয়ে এখন সংসদে বিস্তারিত আলোচনার পর তা গ্রহণ করা হবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।পিডিএসও/মুস্তাফিজ