reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ মে, ২০১৭

শিক্ষক লাঞ্ছনা : জামিন পেলেন সেলিম ওসমান

শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার মামলায় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে জামিন দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার তিনি ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিজেএম) জেসমিন আরার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের প্রার্থনা করলে এই জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। একইসঙ্গে আগামী ৪ জুলাই চার্জগঠনের দিন ধার্য করেন।

এ সম্পর্কে ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন, ২২ মে পর্যন্ত সেলিম ওসমানের হাইকোর্টের জামিন থাকায় মঙ্গলবার তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। গত ২২ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে ঢাকার সিজেএম আদালতে বিচারের জন্য বদলির নির্দেশ দেন।

বিচারপতিদ্বয় আদেশে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে দেশের আইন নিরপেক্ষ ও বৈষম্য ছাড়া প্রয়োগ করা। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন, সবাই আইনের অধীন এটি আইনের শাসনের মর্মবাণী। বিচারিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা ওই ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিচারের স্বার্থে এটি যথাযথ বলে প্রতীয়মান হয়।

মোট ৬৫ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে আরও নথিপত্র রয়েছে। তদন্তকালে মোট ২৭ জনের জবানবন্দি নেয়া হয়। বিচারক তদন্ত প্রতিবেদনে ছয়টি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এগুলো হলো—১. শ্যামল কান্তি ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ রিফাত হাসানকে ২০১৬ সালের ৮ মে মারধর করেছেন তা প্রমাণিত। ২. ইসলাম ধর্ম ও আল্লাহকে নিয়ে শ্যামল কান্তির কটূক্তির সত্যতা পাওয়া যায়নি। ৩. ২০১৬ সালের ১৩ মে ওই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে স্থানীয় জনৈক শামসুল হকের ছেলে অপুর নেতৃত্বে ১০/১২ জন সভাকক্ষে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে মারধর করার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে অপু ছাড়া বাকি ১০/১২ জনের নাম কোনো সাক্ষীই প্রকাশ করেননি। ৪. ২০১৬ সালের ১৩ মে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভা চলাকালে আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় মসজিদ থেকে ঘোষণা প্রদান করা হয় যে ইসলাম ধর্ম আল্লাহকে নিয়ে কূটক্তি করেছেন শ্যামল কান্তি। কে বা কারা ওই ঘোষণা দিয়েছেন, তা নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে বিরোধের কারণে এমন ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে বিশ্বাস করার কারণ আছে। ৫. ২০১৬ সালের ১৩ মে বিকাল পাঁচটার দিকে সাংসদ সেলিম ওসমান প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে তাকে গাল-কানজুড়ে দুই হাত দিয়ে পরপর চারটি থাপ্পড় দিয়েছেন। এমন দাবির সত্যতা পাওয়া যায়নি। ৬. সাংসদ সেলিম ওসমানের নির্দেশে শ্যামল কান্তি ভক্ত কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য হয়েছেন তা ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রতীয়মান হয়েছে। তবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয়েছে যে, উপস্থিত স্থানীয় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সাংসদ ওই নির্দেশ দেন।

২০১৬ সালের ১০ আগস্ট ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নারায়ণগঞ্জের স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে পুরো ঘটনা বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সেলিম ওসমান,শিক্ষক লাঞ্ছনা,আইনশৃঙ্খলা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist