reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

আতিয়া মহলে ৪ জঙ্গি নিহতের মামলার চার্জশিট

সিলেটের আলোচিত জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’-এ বিস্ফোরণে নিহত চার জঙ্গিকে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ করার অভিযোগে তিন জঙ্গির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শনিবার সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিট্রেট আদালতে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন। ৫৩৪ পৃষ্ঠার চার্জশিটে তিনি ৬০টি আলামত আদালতে উপস্থাপন করেছেন।

চার্জশিটে যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা হলেন- আতিয়া মহলে নিহত জঙ্গি মর্জিনার ভাই জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৫), তার স্ত্রী আর্জিনা (১৯) এবং বান্দরবানের নাইখ্যাংছড়ির হাসান (২৬)। তারা তিনজনই নব্য জেএমবির সদস্য।

এদের মধ্যে জসিম ও আর্জিনাকে চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ এবং হাসানকে কুমিল্লার চান্দিনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম কারাগারে রয়েছেন। চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি আতিয়া মহলের মামলায় তাদের শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। এ মামলা ছাড়াও চট্টগ্রামের মিরসরাই, সীতাকুন্ড জঙ্গি আস্তানায় বিস্ফোরক, হত্যা ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

চার্জশিটে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত তিনজনই জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ। আতিয়া মহলে ‘অপারেশন টোয়াইলাইটে’ নিহত মর্জিনাসহ চার জঙ্গিকে তারাই জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক দেওয়ান আবুল হোসেন বলেন, আতিয়া মহলে নিহত চারজনের মধ্যে দুইজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। মর্জিনা ছাড়া অন্যজন হলেন তামিম আহমদ ফরাজি। তিনি খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন।

২০১৭ সালের ২৩ মার্চ মধ্যরাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ‘জঙ্গি আস্তানার’ সন্ধানে শিববাড়ির ‘আতিয়া মহল’ ঘিরে রাখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এরপর ২৫ মার্চ সকাল থেকে ২৮ মার্চ সন্ধ্যা পর্যন্ত আতিয়া মহলে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ পরিচালনা করে।

২৫ মার্চ ভবনের ভেতরে আটকে থাকা ৭৮ নারী, পুরুষ ও শিশুকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে প্যারা কমান্ডোরা। একই দিন সন্ধ্যায় ভবন সংলগ্ন পাঠানপাড়া দাখিল মাদ্রাসার পশ্চিমে পরপর দু’দফা বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান লে: কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, পুলিশের দুই জন ওসিসহ সাত জন নিহত হন।

এ ঘটনায় আহত হন আরো অন্তত অর্ধশত। আতিয়া মহলের ভেতর থেকে এক মহিলাসহ চার জঙ্গির লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৮ মার্চ সন্ধ্যায় অপারেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান। এরপর আতিয়া মহলকে বিস্ফোরকমুক্ত করতে ‘অপারেশন ক্লিয়ারিং আতিয়া মহল’ শুরু করে র‌্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।

আতিয়া মহলে অপারেশনের বিষয়ে মোগলাবাজার থানার এসআই শিপলু দাস বাদী হয়ে হত্যা মামলা এবং এসআই সুহেল বাদী হয়ে বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া আতিয়া মহলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চার জঙ্গি নিহতের ঘটনায় আরো একটি মামলা হয়। এই জঙ্গিবিরোধী অভিযানের মামলাগুলো প্রথমে পুলিশ তদন্ত করে, পরে দায়িত্বভার যায় পিবিআইয়ের কাছে।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আতিয়া মহল,জঙ্গি,চার্জশিট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close