reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ের দিন ধার্য হবে মঙ্গলবার

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ, বর্বরোচিত ও নৃশংস গ্রেনেড হামলার ঘটনায় আনা পৃথক মামলার রায় ও আদেশের তারিখ আগামীকাল মঙ্গলবার ধার্য হবে।

আজ সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেন। এরপর ৫ জন আসামীর পক্ষে আইনজীবী মাঈনুদ্দিন আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ করেন। অপর আসামীদের পক্ষে আইনি পয়েন্টে এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনি পয়েন্টের আলোকে সামগ্রিক যুক্তিতর্ক পেশ শুরু করেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান। কাল আসামীপক্ষে আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ সমাপ্ত হবে বলে জানান অ্যাডভোকেট শাহজাহান।

রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে একুশে আগস্টের ওই ঘটনায় আনা পৃথক মামলায় একইসঙ্গে বিচার চলছে।

আজ সৈয়দ রেজাউর রহমান আইনি পয়েন্টে তার যুক্তি পেশ শেষ করেন। তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংগঠনে হাওয়া ভবনসহ ১০টি ষড়যন্ত্রের স্থানের নামোল্লেখ করেন। ওই স্থানগুলোতে বসেই ২১ আগস্ট হামলার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ছক করা হয়েছে বলে তিনি যুক্তি দেন।

সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ২১ আগস্ট হামলায় ১৫টি আর্জেস গ্রেনেড ব্যবহৃত হয়েছে। এর মধ্যে অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধারকৃত ৪টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হলেও আদালতের অনুমতি ছাড়াই সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি হেয়ারস এভিডেন্স বিষয়ে রেফারেন্স পেশ করেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনসম্বলিত ২৫টি পত্রিকা ফিরিস্ত করে আদালতে দাখিল করেন।

এ মামলায় ৮ আসামী জামিনে রয়েছেন উল্লেখ করে প্রধান কৌঁসুলি মামলার রায় ও আদেশের আগপর্যন্ত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে প্রেরণে আবেদন দাখিল করেন। মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে রাষ্ট্রপক্ষ এ দাবি করে আইন অনুযায়ী আসামীদের সর্বোচ্চ সাজার আর্জি পেশ করা হয়।

সৈয়দ রেজাউর রহমান আদালত, সংশ্লিষ্ট আইনজীবী, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত সদস্যসহ এ মামলার কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষে তিন কার্যদিবস আইনজীবী মোশররফ হোসেন কাজল, বিশেষ পিপি মো. আবু আব্দুল্লাহ ভূঁইয়া ও আকরাম উদ্দিন শ্যামল আইনি পয়েন্টে যুক্তিতর্ক পেশ করেন।

১১৮ কার্যদিবস শেষে মামলাটি এই পর্যায়ে এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ নিয়েছে ২৯ কার্যদিবস আর আসামিপক্ষ নিয়েছে ৮৯ কার্যদিবস। আজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাডভোকেট ফারহানা রেজা, অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান, আবুল হাসনাত জিহাদ, আশরাফ হোসেন তিতাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

২১ আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামীর সংখ্যা ৫২ জন। এর মধ্যে ৩ জন আসামীর অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। এখন ৪৯ আসামীর বিচার চলছে। এর মধ্যে এখনো ১৮ জন পলাতক। মামলার আসামী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, সেনা কর্মকর্তা রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছেন।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ২২৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেয়। আসামীপক্ষে সাক্ষীদের জেরা করেছে। গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আব্দুল কাহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
২১ আগস্ট,গ্রেনেড হামলা,রায়,যুক্তিতর্ক উপস্থাপন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close