যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীসহ ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
ঢাকার ধামরাইয়ে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে স্বামীসহ ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত প্রত্যকেকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৯-এর বিচারক শরীফ উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন। জাফর ছাড়া মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য পাঁচ আসামি হলো জাহাঙ্গীর, আব্দুর রহিম, সালেক, রোকেয়া ও ফেলা মিয়া। তারা সবাই পলাতক রয়েছে। ২০০৫ সালে গৃহবধূ সামিনাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার জেলহাজত থেকে আদালতে হাজির করা হয় আসামি জাফরকে। রায় ঘোষণার সময় সে আদালতে উপস্থিত ছিল।
আদালত ঘোষণার সময় বলেন, ‘সামিনার স্বামী জাফরসহ অন্য আসামিরা যৌতুকের দাবিতে যে নৃসংশতার ঘটনা ঘটিয়েছে তা মানবকুলের মৌলিক বিশ্বাসের জায়গাটি ধ্বংস করে মানবতাকে ভুলণ্ঠিত করেছে। মানুষরূপী এই নরপশুদের নশৃংসতাকে চিরতরে দমন করার জন্য এবং এ ধরনের ঘটনা যেন পুনরায় না ঘটে এবং যৌতুকের কড়াল গ্রাস থেকে সমাজ রক্ষা পায় সে জন্য এই আসামিদের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হলো।’
এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৭ জুন জাফরের সঙ্গে বিয়ে হয় সামিনার। বিয়ের সময় জাফরকে যৌতুক বাবদ ১৬ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময় নগদ ছয় হাজার টাকা দেওয়া হয়। বাকি ১০ হাজার টাকার জন্য স্ত্রী সামিনাকে প্রায়ই মারধর করতো জাফর। বিষয়টি দুই পরিবার থেকে মিমাংসা হলে জাফর ধামরাই দক্ষিণপাড়ায় বাসাভাড়া নেয়। ওই বাসায় নিয়ে ২৩ দিন সামিনাকে খাবার না দিয়ে রাখা হয়। পরে উধাও হয়ে যায় জাফর। সামিনা জাফরকে খুঁজতে তার বোন রোকেয়ার বাসায় যায়। সেখানে অবস্থান করছিল জাফর। পরে সামিনাকে রোকেয়ার ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপর জাফর, রোকেয়া ও রহিম মিলে সামিনার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেদিনই সামিনা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূ সামিনার মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
পিডিএসও/রিহাব