গুলশানে জোড়া খুনে ২ জনের ফাঁসি
রাজধানীর গুলশানের হুন্দাই লিড কোম্পানির টেকনিশিয়ান জাকিউর রহমান জুয়েল ও তার বন্ধু সবুজ হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড এবং দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে ওই হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুর রহমান সরদার এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—কাওসার মোল্লা (পলাতক) ও ফরহাদ গাজী (পলাতক)। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—সুরুজ মিয়া ও সুপর্না। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি এদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরো এক বছর কারাভোগ করতে হবে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ফরহাদ ও সুপর্না চাচাতো ভাই-বোন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা, ভিকটিম জাকিউর রহমান জুয়েল তার আত্মীয় মরিয়ম বেগমের উত্তরখানের বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি আট বছর ধরে হুন্দাই লিড কোম্পানিতে টেকনিশিয়ান পদে চাকরি করতেন। জুয়েলের সঙ্গে তার বন্ধু সবুজ চলাফেরা করতেন। সবুজের সঙ্গে সুপর্নার প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
২০১০ সালের ২০ আগস্ট জুয়েল তার এক আত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করছিলেন। ওই সময় ফরহাদের বোন সুপর্নার মোবাইল থেকে সবুজের মোবাইলে ফোন করে সবুজ ও জুয়েলকে ডেকে নেয়া হয়। এরপর তারা আর ফিরে আসেননি। চারদিন পর খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান না পেয়ে জুয়েলের মোবাইলে ফোন করলে তালুট গ্রামের সুরুজ নামে এক ব্যক্তি ফোন রিসিভ করে একেক সময় একেক ধরনের কথা বলে। বিভিন্ন সময়ে ফোন করলে ওই গ্রামের ফরহাদ ও কাওসার জুয়েলের ফোন রিসিভ করতো। কিন্তু তারা জুয়েল ও সবুজের কোনো খবর দিতো না। ওই ঘটনায় জুয়েলের চাচা মোতালেব হোসেন ২০১০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর চারজনকে আসামি করে উত্তরখান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি সুরুজ মিয়া ও তুহিন মাতুব্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা বলেন, ঘটনার পূর্বে ভিকটিম দুজকে সুপর্নার মাধ্যমে ডেকে নিয়ে ফ্রুটিকা জুসের মধ্যে ঘুমের ঔষধ গুঁড়া করে খাওয়ালে তারা মাতাল হয়ে পড়ে। তখন কাওসার ও ফরহাদ প্রথমে জুয়েলকে গলাকেটে করে হত্যা করে। এরপর সবুজকে জোর করে শুইয়ে সুরুজ মিয়া ও তুহিন মাতুব্বর গলাকেটে হত্যা করে।
মামলাটি তদন্তের পর ডিবি পুলিশের এসআই হাফিজুর রহমান ২০১১ সালের ৩ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তুহিন মাতুব্বর নামে এক আসামি কিশোর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ভিন্ন চার্জশিট দাখিল করা হয়। ২০১২ সালের ১৮ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে আদালত। এরপর মামলার বিচারকাজ চলাকালে ট্রাইব্যুনাল ১০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
পিডিএসও/হেলাল