গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে চালক হত্যায় ৭ জনের কারাদণ্ড
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ব্যাটারিচালিত এক ইজিবাইক চালক হত্যা মামলায় মো. মাসুম (২৮) নামে এক তরুণকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অন্য একটি ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার অপর ৬ আসামির প্রত্যেককে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে গাজীপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ কে এম এনামুল হক এ দণ্ডাদেশ প্রদান করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাসুম কালীগঞ্জ উপজেলার বড়নগর গ্রামের আঙ্গুর খানের ছেলে। অপর আসামিরা হলেন আঙ্গুর খান (৫০), তার ছেলে মো. সুমন (২৫), মো. রাজন (২০), একই এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মজিবুর রহমান ওরফে মজিব ওরফে মজিবুল হক (২৪), আকবর আলী খান (৫৪) ও তার ছেলে মো. হৃদয় (২০)।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক মো. রবিউল ইসলাম মামলার বরাত দিয়ে জানান, বড়নগর এলাকার ভিকটিম আব্দুল হামিদ ও একই এলাকার আঙ্গুর খান দুজনেই ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালক। ইজিবাইকে যাত্রী ওঠানো নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। ২০১৫ সালের ৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে কালীগঞ্জের চান্দাইয়া এলাকায় পৌঁছলে হামিদের ইজিবাইকে আঙ্গুর খান ধাক্কা দেয়। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি ঘটনা ঘটে। পরে হামিদ বিষয়টি মিমাংসার জন্য স্থানীয় কয়েকজন মুরব্বীকে সাথে নিয়ে ওই দিন সকাল ১০টার দিকে আঙ্গুর খানের বাড়ির পাশে আঙ্গুর খানের সাথে দেখা করতে যান। এ সময় ফারক শেখের কথা অনুযায়ী হামিদ ক্ষমা চাইতে আঙ্গুর খান তাকে গালা ধাক্কা দেয় এবং তার নিদের্শে আসামীরা হামিদকে মারধর করে এবং তার সাথে টাকা ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল সেট নিয়ে যায়। পরে লোকজন হামিদকে উদ্ধার করে প্রথমে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ধানমন্ডি জেনারেল এন্ড কিডনী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ মার্চ হামিদ মারা যায়।
পরে ১২ মার্চ নিহতের স্ত্রী আউলিয়া বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের নামে এবং অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামী করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ এবং শুনানী শেষে আজ আদালত ওই দণ্ড দেন। রাষ্ট্রপক্ষে পিপি অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহম্মদ এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবীর ও মো. কাউসার সিকদার মামলাটি পরিচালনা করেন।
পিডিএসও/হেলাল