নড়াইলের আ.লীগ নেতা হত্যায় ৯ জনের ফাঁসি
নড়াইলের ভদ্রবিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি প্রভাষ রায় ওরফে হানু হত্যা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৯ জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। রোববার দুপুরে খুলনার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম এ রব হাওলাদার এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণাকালে সকল আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—নড়াইল জেলা সদরের মীরাপাড়ার মৃত মজিদ মিনার দুই ছেলে ভদ্রবিলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান মিনা ওরফে শহিদ (৫২) ও ইলিয়াছ মিনা (৫৬), সাহিদুর রহমান মিনার ছেলে আশিকুর রহমান মিনা ওরফে আশিক (২২), মোশারফ মিনার ছেলে রাসেল মিনা (৩০), মৃত হাতেম মোল্লার ছেলে বাশার মোল্লা (৩০), মোশারফ মোল্লার ছেলে রবিউল মোল্লা (২৫), আটেরহাট এলাকার মৃত হারান মোল্লার ছেলে এনায়েত মোল্লা (৫৩), পইলডাঙ্গা গ্রামের মতিয়ার মোল্লার ছেলে ইয়াসিন মোল্লা (২৪) ও মুসা মিনার ছেলে মামুন মিনা (২৮)।
আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী ফকির মো. জাহিদুল ইসলাম নথীর বরাত দিয়ে জানান, গত ইউপি নির্বাচনে প্রভাষ রায় নৌকার পক্ষে কাজ করেন। অপরদিকে আসামি সাহিদুর রহমান মিনা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর চেয়ারম্যানের সমর্থকরা প্রভাষ রায়ের বাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় প্রভাষ রায় চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনার জেরে ২০১৭ সালের ১ ফেব্রয়ারি বিকেলে প্রভাষ রায় শহর থেকে সরস্বতী পূজা পরিদর্শন শেষে মীরাপাড়া বাজারের ফারুকের চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ভদ্রবিলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান ফকিরের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা একত্রিত হয়ে প্রভাষ রায়ের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা একটি বড় ছোরা প্রভাষ রায়ের পেটে ঢুকিয়ে দেয় এবং এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে বাজারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখান থেকে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রভাষ রায় মারা যান।
এ ঘটনায় প্রভাষ রায়ের স্ত্রী টুটুল রানী রায় বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫/৭জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ভবতোষ রায় ৯জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট এনামুল হক।
পিডিএসও/হেলাল