ফের রক্তাক্ত কাশ্মীর, নিহত ১১
কাশ্মীরের অনন্তনাগ-আচাবল সড়কের ওপর শুক্রবার রাতে টহলরত পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। এতে ছয় পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছে। নিহত পুলিশ সদস্যদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে জঙ্গিরা তাদের মুখমণ্ডল বিকৃত করে দিয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে কাশ্মীরের কুলগামে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে লস্কর-ই-তৈবার কমান্ডার জুনেইদ মাট্টুর (২৪)। এসময় আদিল মুস্তাক মীর (১৮) এবং নিসার আহমেদ ওয়ানি (২০) নামে অন্য দুই জঙ্গিও নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহত হয়। সেই প্রতিশোধ নিতেই জঙ্গিরা পাল্টা পুলিশের ওপর হামলা চালায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শুক্রবার সেনা-জঙ্গির গুলির লড়াইয়ে গুরুতর আহত হয় কাশ্মীরের বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর মহম্মদ আসরাফ খার (৩৪) এবং এহসান মুস্তাক (১৫) নামক দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
দুই বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি এস.পি.বেদ। শনিবার তিনি জানান, জঙ্গিরা যখন নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালায় তখন তার পাল্টা প্রতিরোধ করা ছাড়াও উপায় থাকে না। হামলাস্থলের কাছাকাছি কেউ থাকলে তারও বুলেটবিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে সাধারণ মানুষের নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার উপত্যকায় হরতালের ঘোষণা দিয়েছে কট্টরপন্থী সংগঠন হুরিয়ত কনফারেন্স। দলের তিন নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানি, মিরওয়াইজ ওমর ফারুক এবং ইয়াসিন মালিক একযোগে উপত্যকায় হরতাল ঘোষণা দেয়।
হামলা-পাল্টা হামলায় শনিবার সকাল থেকেই থমথমে চেহারা নিয়েছে কাশ্মীর উপত্যকা। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ে আজকের সমস্ত পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। কাশ্মীর থেকে বানিহাল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যাও অনেক কম।
অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ। বন্ধ রয়েছে দোকান-বাজারও। উপত্যকায় সহিংসতা যাতে না ছড়াতে পারে তার জন্য দক্ষিণ কাশ্মীরজুড়ে ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ ও কুলগামে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিশৃঙ্খলা এড়াতে রাস্তায় রাস্তায় টহল দিচ্ছে পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা।
পিডিএসও/রিহাব