পার্থ মুখোপাধ্যায়

  ১৯ নভেম্বর, ২০১৯

ভারতে বেকারত্ব বাড়ছেই

দেশে অসংগঠিত ক্ষেত্রে লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে বা আরো বেশি করে লোক বেকার হচ্ছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মালা রায়ের প্রশ্নের যে লিখিত জবাব কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষকুমার গাঙ্গোয়ার দিয়েছেন তাতে স্পষ্ট, অসংগঠিত ক্ষেত্রে আরো বেশি করে লোক বেকার হচ্ছেন।

কৃষি বাদ দিয়ে অন্য সব ক্ষেত্রে কর্মী-জনসংখ্যার হার ২০১৩-১৪-তে ছিল ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ৷ ২০১৫-১৬-তে তা কমে দাঁড়ায় ৫০ দশমিক ৫ শতাংশে৷ আর ২০১৭-১৮-তে তা আরো কমে হয়েছে ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ৷ সব মিলিয়ে অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সংখ্যা কয়েক বছরের মধ্যে সাত শতাংশ কমে গিয়েছে৷ ২০১৩-১৪ থেকে প্রতি বছরই তা কমছে৷

কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী বলেছেন, প্রথম দু’টি সমীক্ষা করছিল লেবার ব্যুরো, আর ১৭-১৮-এর সমীক্ষাটি করেছে এনএসএসও৷ এটা হল তাঁদের পিরিওডিক লেবার ফোর্স সার্ভের ফল৷ এই দুই সমীক্ষার প্রক্রিয়া ও স্যাম্পেল বাছাইয়ের পদ্ধতি আলাদা৷ অর্থাৎ, দুই সমীক্ষার ফলকে তুলনা করাটা ঠিক হবে না৷

লেবার ব্যুরোর সমীক্ষা থেকেও দেখা যাচ্ছে, ২০১৩-১৪-এর তুলনায় ২০১৫-১৬-তে অংসগঠিত ক্ষেত্রে কর্মী সংখ্যা বেশ কিছুটা কমে গিয়েছে৷ ফলে সেই প্রবণতা এনএসএসও’র সমীক্ষাতেও দেখা যাচ্ছে৷ সন্তোষকুমার গাঙ্গোয়ার জানিয়েছেন, কৃষিক্ষেত্রে ২০১৭-১৮ সালের সমীক্ষা বলছে, ৬৮.৪ শতাংশ শ্রমিক এর সঙ্গে যুক্ত৷ আর কৃষিই হচ্ছে অসংগঠিত ক্ষেত্রের মধ্যে প্রধান৷

অন্যদিকে, মন্দার জেরে চলতি বছরে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি প্রায় ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করতে পারে। এমনই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পক্ষেত্রের বর্ষীয়ান ব্যক্তিত্ব টিভি মোহনদাস পাই। এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির মধ্যস্তরীয় কর্মীদের ওপরে সর্বাধিক কোপ পড়তে চলেছে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছেন তিনি।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পক্ষেত্রে এই ধরনের কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতাকে স্বাভাবিক বলেই মনে করেন ইনফোসিসের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক আধিকারিক মোহনদাস পাই। এক্ষেত্ৰে তার ব্যাখ্যা, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে অগ্রগতির হাত ধরে প্রতি ৫ বছরে একবার এমন পরিস্থিতি আসে।

মোহনদাস পাই আরো জানিয়েছেন, কোরো শিল্প সংস্থার অগ্রগতি ঘটলে মধ্যবর্তী স্তরের বহু কর্মী উদ্বৃত হয়ে পড়েন। কারণ তারা যে পরিমাণে বেতন পান, তার সমপরিমাণে পরিষেবা দিতে পারেন না। পশ্চিমের দেশগুলির পাশাপাশি ভারতেও এটা সমানভাবে সত্য।

অটোমেশন এবং বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিম্নগতির জেরে আগামী ৩ বছরে ২ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ার চাকরি হারাতে পারেন বলে আগেই একটি রিপোর্টে জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির বণিকসভা ন্যাসকম। বলা হয়েছে, আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে অর্ধেক ওয়ার্কফোর্সের কাজ থাকবে না।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
তথ্যপ্রযুক্তি,কর্মসংস্থান,ভারত,বেকার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close