পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা

  ১৭ জুলাই, ২০১৯

বিয়ের আগে মোবাইল নয়, থানায় গণধর্ষিতার উপড়ানো হলো নখ

গুজরাতের বানাসকান্থার দান্তিওয়াড়ায় কোনও অবিবাহিত কন্যা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবে না বলে নির্দেশ জারি করেছে সেখানকার থাকোর সম্প্রদায়। জালোল গ্রামে একটি সভা করে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কোনও অবিবাহিত মেয়ে মোবাইল ব্যবহার করলে শাস্তি হিসেবে তার বাবাকে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া বিয়ের সময় ডিজে পার্টি বা বহু টাকার বাজি পোড়ানোও বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিয়েতে অতিরিক্ত খরচ বন্ধ করতেই এই নির্দেশ বলে জানানো হয়েছে।

থাকোর সম্প্রদায়ের বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে কোনও মেয়ে পরিবারের অমতে বিয়ে করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এই নিয়মগুলিকে গ্রামের লোক তাদের স্থানীয় সংবিধান হিসেবে মেনে নিয়েছেন। গুজরাতের বানাসকান্থা জেলার দান্তিওয়াড়া তালুকে ঠাকর সম্প্রদায়ের বাস। গত ১৪ জুলাই ওই এলাকার ঠাকর সম্প্রদায়ের বয়স্ক ব্যক্তিরা জেগোল গ্রামে আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ওই সম্প্রদায়ের প্রায় আটশো জন। সেখানে তারা অবিবাহিত মেয়েদের মোবাইল ব্যবহার ও ভিন্ন জাতের বিয়ে করার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার পরই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে সমাজের বিভিন্ন মহলে। ঠাকর সম্প্রদায়ের কর্তাব্যক্তিরা আলোচনা করে ঠিক করেন, কোনও মেয়ে যদি অন্য সম্প্রদায়ের কোনও ছেলেকে বিয়ে করে তাহলে সেই ঘটনার দায় বর্তাবে মেয়েটির বাবা-মায়ের উপর। ওই কাজের জন্য মেয়েটির পরিবারকে ১.৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। এই কাজ যদি ঠাকর সম্প্রদায়ের কোনও মেয়ে করে তাহলে ছেলেটির পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে ।

শুধু তাই নয়, অবিবাহিত মেয়েদের মোবাইল ব্যবহার করা নিয়েও ঠাকর সম্প্রদায়ের নেতারা বেশ চিন্তিত। তারা মনে করেন, প্রযুক্তির দিকে মেয়েরা বেশি ঝুঁকে পড়লে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। তাই কলেজে যাওয়া অবিবাহিত মেয়েদের হাতেও মোবাইল দিতে বারণ করা হয়েছে অভিভাবকদের। এই সমস্ত সিদ্ধান্তের কথা ছড়িয়ে পড়তেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এভাবে সভা ডেকে গ্রামের মোড়লরা কী ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন। যদিও ঠাকর সম্প্রদায়ের এই সিদ্ধান্তে ভুল কিছু দেখছেন না সেখানকার কংগ্রেস বিধায়ক গানি বেন ঠাকর। এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে তিনি জানিয়েছেন, পড়াশোনায় মন দিতে মেয়েদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।

অন্যদিকে, রাজস্থানে থানার ভেতরে গণধর্ষণের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা সামনে এনেছেন এক দলিত মহিলা। অভিযোগ, থানার মধ্যেই গণধর্ষণের পর তার ওপর অকথ্য অত্যাচার চালায় পুলিশকর্মীরা। এমনকি স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে তার নখও উপড়ে ফেলে দেওয়া হয়। অভিযোগ, রাজস্থানে চুরু জেলার সর্দার শহর পুলিশ স্টেশনে ৩৫ বছরের এক দলিত মহিলাকে গণধর্ষণ করে কয়েকজন পুলিশ কর্মী। এফআইআর দায়ের করার পর সহকারী পুলিশ কমিশনারের কাছে নিজের যে অভিজ্ঞতার কথা তিনি বলেছেন, চুরিতে সাহায্য করার অভিযোগে থানায় তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তারপর সেখানে আটকে রেখে চলে ভয়াবহ অত্যাচার। তাকে বাধ্য করা হয় সবার সামনে কাপড় খুলে ফেলতে। তারপর শুরু হয় গণধর্ষণ। বাধা দিতে গেলে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এক মহিলা কনস্টেবল তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন বলে জানিয়েছেন ওই দলিত মহিলা। সহকর্মীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি কিছু। একটা ঘরে তাকে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন ওই মহিলা কনস্টেবল। কিন্তু পরদিন সকালে ফের শুরু হয় অত্যাচার।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিয়ের আগে,মোবাইল,গণধর্ষিতা,নখ,উপড়ানো
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close