বাংলাদেশি ২ কিশোরীকে দেহ ব্যবসায় নামানোয় যাবজ্জীবন
বাংলাদেশি ২ কিশোরীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে পাচার করে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসায় নামানোর দায়ে ভারতীয় এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। কারাদণ্ড ছাড়াও সাবু শেখ নামের ওই যুবককে ৫০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়। গত মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি মহকুমা আদালতের বিচারক সন্দীপ কুমার মান্না এ রায় দেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট মুর্শিদাবাদ জেলার সালার থানাধীন চুনশহর গ্রামে দণ্ডিত সাবু শেখের বাড়ি থেকে প্রথমে সাইদা খাতুন নামের এক বাংলাদেশি কিশোরীকে উদ্ধার করে সালার থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় সাবুকেও। পরে সাবুকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার মায়াপুরের একটি হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় কাকলী খাতুন নামে অপর এক বাংলাদেশি কিশোরীকে। উদ্ধার পাওয়া দুই কিশোরী জানায়, তাদের জোর করে দেহ ব্যবসায় নামানো হয়।
পুলিশ জানায়, ২০১৬ সালে সাবু শেখ ও তার এক সাগরেদ মনি শেখ বাংলাদেশ থেকে ওই দুই কিশোরীকে কাজের লোভ দেখিয়ে চোরাপথে কলকাতায় নিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে জোর করে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রের হোটেলে তাদের দিয়ে দেহ ব্যবসা চালাত সাবু।
একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে সালার থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় সাইদা খাতুন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই পরবর্তী সময়ে তাদের উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেফতার করে সাবু শেখসহ নারী পাচার চক্রের মোট ১০ জনকে। পরে সাবুর বিরুদ্ধে ভারতীয় দ-বিধির ৩৭০, ৩৭০-এ, ৩৭২, ৩৬৬-বি এবং ৩৪ ধারায় মামলা করা হয়।
দেড় বছরের অধিক সময় ধরে চলা মামলায় মোট ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। অবশেষে মঙ্গলবার সাবু শেখকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ৫০ হাজার রুপি জরিমানা করা হয়। সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে গ্রেফতার বাকি ৯ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয় বলে জানান মামলার সরকারি আইনজীবী সুনীল চক্রবর্তী।
উদ্ধার পাওয়া সাইদা ও কাকলীর বাড়ি যথাক্রমে বাংলাদেশের খুলনা ও দিনাজপুর জেলায় বলে জানা গেছে। কিশোরীদের আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশে নিজ নিজ পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পিডিএসও/তাজ