রাখাইনে ফিরেছে এক রোহিঙ্গা পরিবার
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রথম একটি পরিবারকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার। যদিও জাতিসংঘ জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের এখনই দেশে ফেরা নিরাপদ নয়।
মিয়ানমার সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শনিবার সকালে পাঁচ সদস্যদের একটি মুসলিম পরিবার রাখাইনের তাউনপিওলেতউইয়া সেন্টারে পৌঁছে। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, যেহেতু তারা একসময় এ দেশে বসবাস করেছেন, তাই তাদের একটি জাতীয় প্রত্যয়নপত্র দেয়া হবে। অর্থাৎ তারা নাগরিকত্ব কিংবা দেশটিতে বেঁচে থাকার পূর্ণ অধিকার পাচ্ছেন না।
মিয়ানমারে প্রবেশের পর দেশটির অভিবাসন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাদের স্বাস্থ্যগত পরীক্ষা করেছেন। সমাজকল্যাণ, ত্রাণ ও পুর্নবাসনবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে চাল, মশারি, কম্বল, গেঞ্জি, লুঙ্গি ও রান্নার জিনিসপাতি দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলেছে, এখন ব্যাপকহারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করা হলে সেটি একটি অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত হবে। মিয়ানমার সরকার এখনও তাদের ওপর আইনগত বৈষম্য ও কয়েক দশকের নির্যাতনের প্রক্রিয়া বন্ধ করেনি।
তবে রোহিঙ্গা নেতারা মিয়ানমার সরকারের এই এনভিসি’র সমালোচনা করেছেন। তারা বলছেন, এই কার্ড দেয়ার অর্থ হলো সারাজীবন রাখাইনে বাস করা রোহিঙ্গারা এখন নতুন অভিবাসী হিসেবে বিবেচিত হবেন। এদিকে মিয়ানমার সরকার বলছে, রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে দুটি রিসেপশন সেন্টার ও রাখাইন সীমান্তের কাছে একটি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করেছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিষয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার এক চুক্তি সই করে। ওই চুক্তি অনুযায়ী আগামী দুই বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একমত হয় ঢাকা-নেইপিদো। গেলো সপ্তাহে মিয়ানমার সফরের পর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সহকারী মহাসচিব উরসেলা মুলার বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং যুক্তরাজ্যভিত্তিক অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, রাখাইন রাজ্য এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত নয়। তা স্বত্বেও শনিবার এক রোহিঙ্গা পরিবার ফিরিয়ে নিলো মিয়ানমার। এর আগে গেলো বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ক্লিয়ারেন্স অভিযান শুরু করার পর প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে বলেছে, রাখাইনে জাতিগত রোহিঙ্গা নিধন অভিযান চালানো হচ্ছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, রয়টার্স, এএফপি
পিডিএসও/তাজ