চীনের প্রেসিডেন্ট আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন
এখন থেকে আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন চীনের প্রেসিডেন্ট। খবরে প্রকাশ, রোববার দেশটির পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনের নির্দিষ্ট সময়সীমা বিলুপ্ত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এর ফলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও আজীবন ক্ষমতায় থাকার অধিকার পেলেন। চীনের প্রায় ৩ হাজার প্রতিনিধির রাবারস্টাম্প পার্লামেন্ট প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার মেয়াদকাল বিলুপ্ত করে সংবিধানের পরিবর্তন আনার লক্ষে আইন পাস করে। ভোটাভুটিতে এই উদ্যোগের পক্ষে ভোট দেয় ২ হাজার ৯৫৮ জন। দু’জন বিপক্ষে ভোট দেয় ও ৩ জন ভোটদানে বিরত থাকে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, চীনে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ বিলুপ্ত করে একটি বিল পাস করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টি অব চায়না। ওই বিল পাস হওয়ার ফলে বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও আজীবন প্রেসিডেন্ট থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। আজ পিপলস পার্টির বাৎসরিক সভায় নিরঙ্কুশ সমর্থন নিয়ে পাস হয় বিলটি। গত বছর অক্টোবরে চীনের পিপলস পার্টি শি জিনপিংয়ের চিন্তাধারাকে দলীয় গঠনতন্ত্রে স্থান দেওয়ার মধ্যদিয়ে তাকে মাও সে তুংয়ের সমান মর্যাদায় নিয়েছিল।
আজ কংগ্রেসের শুরুতেই উপস্থিত প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে ৩ ঘণ্টা ভাষণ দেন শি জিনপিং। ওই ভাষণে প্রথমবারের মতো নতুন যুগের চীনা পদ্ধতির সমাজতন্ত্র সংক্রান্ত চিন্তাধারা নামে তার নিজের মতামত তুলে ধরেছিলেন তিনি। পরে পার্টির এক প্রস্তাবে বলা হয়, কংগ্রেস দ্ব্যর্থহীনভাবে শির চিন্তাধারাকে দলীয় গঠনতন্ত্রের মূলনীতি অংশে স্থান দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে।
শি জিনপিং ২০১২ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকেই শি দেশটির ইতিহাসে ধারাবাহিকভাবে আত্মপ্রত্যয়ী ও নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ববাদী একটি যুগের সূচনা করেন। একইসাথে তার হাত ধরে চীন এক নতুন জাগরণ দেখতে পেয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। পরাক্রমশালী দেশ হিসেবে বিশ্বের কাছে চীনের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে তিনিই এখন সামনে থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
এদিকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে সফলতার পাশাপাশি ভিন্নমতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড়ের অভিযোগ রয়েছে বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে গত বছর অক্টোবরে তার চিন্তাকে দলীয় গঠনতন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি। আধুনিক চীনের রূপকার হিসেবে স্বীকৃত মাও সে তুংয়ের পর শি জিনপিং হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি, ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় যার চিন্তা দলীয় গঠনতন্ত্রে মতাদর্শের মর্যাদা পায়।
মতাদর্শের মর্যাদা পাওয়ায় মাওয়ের মতবাদ যেমন মাওবাদ হিসেবে বিবেচিত হয়, শি’র চিন্তাধারাও বিবেচিত হচ্ছে শি-বাদ হিসেবে। এর বিরুদ্ধে যেকোনও চ্যালেঞ্জ এখন থেকে কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধের অবস্থান বলে বিবেচিত হয়।পিডিএসও/মুস্তাফিজ