ইসমাইল রিফাত, সংবাদকর্মী

  ২৮ আগস্ট, ২০১৯

স্বপ্নের পথিক বেরোবির সৌরভ

মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখেন। স্বপ্ন দেখেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। জীবনে যা ভাবে, জীবনকে যেমন দেখতে চায় সেটার প্রতিফলন ঘটে স্বপ্নে। কোনও স্বপ্ন পূরণ হয়, কোনওটা হয় না। তবুও মানুষ স্বপ্ন দেখে। তেমনি একজন স্বপ্নের পথিক হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাফি উদ দৌলা সৌরভ ।

শাফি উদ দৌলা সৌরভ বেড়ে উঠেছেন নানা বাড়িতে। গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া গ্রামে। তবে এলাকার সবাই তাকে সৌরভ নামেই চেনেন। দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন বাবা মোঃ সিরাজুলকে হারিয়েছেন। তাই মা শাহিনুর বেগমকেই সামলাতে হয়েছে একটি বড় পরিবারকে। মা পেশায় একজন সরকারি চাকুরীজীবি । ১১ ভাই-বোন । ভাইদের মধ্যে সৌরভ সবার ছোট, তার ছোট দুই বোন যার একজন পড়াশুনা করছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েই।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পূর্ণ করেছেন তিনি। পড়াশুনা শেষ করে তার বন্ধু-বান্ধবরা যখন চাকরির পেছনে ছুটছেন। তখন তিনি চাকরির সুযোগ পান জাপানের টোকিও শহরে। দেশ ছেড়েছেন চলতি মাসের ২৪ তারিখ। অনার্স শেষ করইে নিজ বিভাগের শিক্ষক ড. মোঃ মিজানুর রহমানের “সেমান্টিক ল্যাব”এ রিসার্চার ও ডিভেলপার হিসেবেই তার হাতে খড়ি। সেখান থেকেই জাপানের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রতিষ্ঠান “ডেলোয়েট টাচ টহমাটসু এল এল ছি” (Deloitte Touch Tohmatsu LLC) রিক্রুটমেন্ট ভাইভা নেয় । ভাইভা প্রসেসিং চলে প্রায় এক বছর ধরে। সর্বশেষ এই বছরেই ওরা অফার লেটার পাঠিয়ে দেয়। এই প্রতিষ্ঠানটিতে তার কাজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে রিসার্চ করা। সৌরভ সেখানেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইঞ্জিনিয়ার পদে ১ সেপ্টেম্বরেই যোগদান করবেন ।

ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে কি হবেন- তাই ভেবে সাজানো ছিলো না তার স্বপ্নে । তবে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ধরনের কনটেস্টে অংশগ্রহণ করতেন, সর্বশেষ বাংলাদেশ ইউথফেস্ট-২০১৬ ডিভিশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তারা। স্বপ্ন দেখতেন মানুষের কর্মসংস্থান করার। সেই লক্ষ্যেই তিনি আর তার বান্ধবী মিলে গড়েছেন ‘খাইদাই টুডে” নামে অনলাইন ফুড ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান । যা এখন রংপুর ও বগুড়া পর্যন্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

সৌরভ সব কয়টি সেমিস্টারেই কৃতিত্বের সাথে প্রথম স্থান দখল করেন। ছিলেন মিশুক স্বভাবের। তাইতো টানা ৬ টা সেমিস্টারেই ছিলেন ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ (সি-আর)। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও। জুনিয়রদের সাথে তার সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ায় ক্যাম্পাস জীবনে সেরা সময় কাটিয়েছেন তাদেরকে ঘিরেই। পড়াতে ভাল লাগত বলে করাতেন টিউশনি।

সৌরভ ছিলেন ভ্রমণপ্রিয়, তাই সময় পেলেই প্রচুর ঘোরাঘুরি করতেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ অধ্যয়নরত রংপুরের শিক্ষার্থীরা যখন ছুটিতে রংপুরে আসত তাদের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতেন। এভাবেই বিভাগের শিক্ষক থেকে শুরু করে সিনিয়র জুনিয়রের সবার প্রিয় মুখ হয়ে উঠেন সৌরভ!

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বেরোবি,সৌরভ,আমার আমি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close