মেহেরুন রুমা
তাইরানের জন্মদিনে
রোজ রাতে চোখ বুঝতে গেলে ভাবি, হয়তো এটাই আমার শেষ রাত, আর যদি না মেলে এই আঁখি! আমার আলমারি ভরা কাপড়, সাজানো চুড়ি ক্লিপ চুলের কাটা, ধুলা জমতে না দেওয়া বইয়ের তাক, পাতা ভাঁজ করে চিহ্ন দিয়ে রাখা বইয়ের পরবর্তী পাতাটা উল্টানোর যদি সুযোগ না আসে জীবনে! নতুন লেখা গল্পটা যদি আর শেষ করতে না পারি!
ক্ষণিকের এই মানবজনম নিয়ে কিসের এত অহংকার। কিছুই তো আমার নয়। কার প্রতি আমার হিংসে। সেতো আমার থেকেও আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রিয় হতে পারেন। আমি তো তুচ্ছ, অতি নগণ্য।
রোজ কত উৎসবে মেতে থাকি আমরা। খেতে না পারলেও রাশি রাশি পদ রান্না করে সাজিয়ে রাখি, ছবি তুলি। এক এক উৎসবে এক এক পোশাকে সাজি। ভেবে কি দেখি, কেউ কত বঞ্চিত?
আমি তো মানুষ নই। আমি জগতের সবচেয়ে স্বার্থপর কেউ, আমি অহংকার পুষে আপনি বড় হই। অন্যের ভালোয় জ্বলে পুড়ি, পরনিন্দা লোভ আমাকে দাস বানিয়ে রাখে।
গত ১/১/১৯ তারিখ ছিল তাইরানের প্রথম জন্মদিন। না কেটেছি কেক, না নিভিয়েছি মোমবাতি, না কিনে দিয়েছি নতুন কিছু। দুই বাচ্চাকে নিয়ে রাত্রি শেষের নির্জনতায় বেড়িয়ে পড়েছি এই মানুষগুলোর কাছে যাব বলে।
আল্লাহর কাছে কোটি কোটি শুকরিয়া, আমার সন্তানদেরকে ওরকম খোলা আকাশের নিচে শীতের রাত পার করতে হয় না। কত কত মানুষের থেকে আমাকে কত নিয়ামত দিয়ে রেখেছেন মহান সৃষ্টিকর্তা! নিজের দিকে তাকালেই আমরা তার অস্তিত্ব অনুভব করি।
পিডিএসও/হেলাল