বাংলাদেশ ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত সতর্কতা জারি
বাংলাদেশ ভ্রমণে মার্কিন নাগরিকদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।গতকাল শুক্রবার জারি করা এই সতর্কতায় অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের কারণে মার্কিন নাগরিকদের ঢাকা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ্রমণের বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর আগে এপ্রিলে এ সতর্কতায় বাংলাদেশকে দ্বিতীয় পর্যায়ে (লেভেল ২) রাখা হয়েছিল। এবারও আগের লেভেল বহাল রয়েছে; তবে সতর্কতা অবলম্বনের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সশস্ত্র ডাকাতি, হামলা ও ধর্ষণের মতো সহিংস অপরাধ ব্যাপক আকারে ঘটছে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো বাংলাদেশে সম্ভাব্য হামলার পরিকল্পনা করে যাচ্ছে। তারা কোনো হুমকি না দিয়েই হামলা চালাতে পারে। তারা পর্যটন এলাকা, যোগাযোগ কেন্দ্র, বাজার বা শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, ধর্মীয় স্থাপনা ও স্থানীয় সরকারি অফিসগুলোতে হামলা চালাতে পারে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দেশটির শহরাঞ্চলে ব্যাপক পুলিশ উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, ঢাকায় অপরাধ প্রবণতা বেশি এবং রাতে তা অনেকটা বেড়ে যায়। অপরাধীরা শহরে অপরাধ ঘটাতে পারে। সাধারণভাবে এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি, চুরি, ডাকাতি, গাড়ি চুরি, ধর্ষণ, হামলা ও ছিনতাই।
খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অপহরণ ও অন্যান্য নিরাপত্তা ঘটনা রয়েছে এর নেপথ্যে। রাজনৈতিক বিক্ষোভ, অবরোধ ও সহিংস সংঘর্ষ অব্যাহত থাকবে। এই জেলাগুলো ভ্রমণে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা কার্যালয়ের যথাযথ অনুমতি নিতে হবে।
ভ্রমণ নির্দেশিকায় বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে কর্মরত সরকারি কর্মীদের সঙ্গে শুধু তাদের প্রাপ্তবয়স্ক স্বামী-স্ত্রী ও সঙ্গীর বসবাসের অনুমতি থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন কর্মকর্তাদের চলাফেরা, কাজ ও ভ্রমণে নিরাপত্তা গাইডলাইন কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ জারি করেছে। যথাযথ অনুমতি ছাড়া বড় সমাবেশ, এমনকি আন্তর্জাতিক হোটেলে হলেও তাতে উপস্থিত না হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যেসব মার্কিন নাগরিক বাংলাদেশ ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাদের বেশ কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, সব ধরনের বিক্ষোভ বা রাজনৈতিক সমাবেশ এড়িয়ে চলা, ডাকাতির চেষ্টা হলে প্রতিহত না করে নিরাপদ স্থানে গিয়ে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা, হাঁটা, দৌড়ানো এবং মোটরসাইকেল, রিকশা ও সিএনজিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণকারী মার্কিন নাগরিকদের স্মার্ট ট্রাভেলার এনলোমেন্ট প্রোগ্রামে নিবন্ধিত হতে বলা হয়েছে যাতে সতর্ক বার্তা পৌঁছানো এবং জরুরি সময়ে অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়। সতর্কতায় বাংলাদেশ ভ্রমণকারীদের সম্ভাব্য যেকোনো ঘটনার জন্য প্রস্তুতি রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
পিডিএসও/তাজ