নিউইয়র্ক প্রতিনিধি
যুক্তরাষ্ট্রে মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে সোচ্চার বাংলাদেশি তরুণী
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এক মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিনি। নিউইয়র্কের হাডসন শহরের ওই বাসিন্দার নাম জাবিন আহমেদ রুহি। তবে মসজিদ কমিটির সভাপতির দাবি, কোনো ধরনের বৈষম্যকে সমর্থন করেন না তারা।
রুহির পক্ষ থেকে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল হাডসন ইসলামিক সেন্টারের নির্মাণ কাজ শুরু উপলক্ষে অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু রুহির অভিযোগ, বারবার অনুরোধের পরও সেখানে মুসলিম নারীদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অথচ ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত তালিকায় ছিলেন নারীরাও। যদিও মসজিদ কমিটির সভাপতির দাবি, পর্যাপ্ত আসন না থাকায় নারী ও শিশুদের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। ইসলামিক সেন্টারে কোনো ধরনের বৈষম্যের জায়গা নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি।
হাডসনে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটি এত দিন ভবনের বেজমেন্টে নামাজ আদায় করেছে। অবশেষে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের প্রায় ২০ বছর পর নিজস্ব ইসলামিক সেন্টারের নির্মাণ কাজ শুরু করছেন তারা। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রচুর লোক উপস্থিত হন।
জানা গেছে, ভাই ও বোনেরা সম্বোধন করে নারীদের কাছেও আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পুরুষদের স্পষ্ট বলে দেওয়া হলো, নারীরা ওই জমায়েতে অংশ নিতে পারবে না। এর বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানিয়ে রুহি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ইসলাম সবার জন্য, বিশেষভাবে কারো জন্য কেবল ইসলাম নয়।’ তার এই পোস্ট এরই মধ্যে মুসলিম কমিউনিটির অনেক নারী ও পুরুষের দৃঢ় সমর্থন পেয়েছে। তিনি আশা করেন, এটি দেশটির অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়বে।
রুহি জানান, মসজিদ কমিটির সদস্যরা প্রথম প্রজন্মের বাংলাদেশি, যারা ৩০ বা ৪০ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। তার অভিযোগ, এই ব্যক্তিরা নিজেদের মতো করে ইসলামের ব্যাখ্যা দেন।
এ ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হওয়া প্রসঙ্গে রুহি বললেন, ‘আমি নীরব না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কারণ ছোটবেলা থেকেই এমন বৈষম্য দেখে আসছি। যদি এখনই এসব বিষয় না পাল্টায় তাহলে তা চিরকাল ধরে চলতে থাকবে।’
এদিকে স্থানীয় একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইসলামিক সেন্টারের সভাপতি আবদুল হান্নান বলেন, ‘আমাদের মসজিদ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে কোনো বৈষম্যের জায়গা নেই। সেখানে নারী-পুরুষ সবাই একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে।’ তবে ইসলামিক সেন্টারের এক স্বেচ্ছাসেবী বলেছেন ভিন্ন কথা, ‘অনুষ্ঠানে কোনো মুসলিম নারীকে আসতে দেওয়া হয়নি। এর কারণ ইসলামের রীতি অনুযায়ী নারীদের আলাদা জায়গায় প্রার্থনা করতে হয় কিন্তু ইসলামিক সেন্টার সেই ব্যবস্থা রাখতে পারেনি।’
পিডিএসও/তাজ