নিজস্ব প্রতিবেদক
সংস্কারকাজে ধীরগতি
মালিবাগ-রামপুরার রাস্তায় দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছেই না
রাজধানীর মালিবাগ-রামপুরা সড়ক মেরামত ও উন্নয়নের নামে সংস্কারকাজ দীর্ঘদিনেও শেষ হচ্ছে না। ফলে দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছেই না নগরবাসীর। এসব সড়ক দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। সেই সঙ্গে ফ্লাইওভারের নির্মাণসামগ্রী যত্রতত্র রাস্তায় ফেলে রাখায় দুর্ভোগ বেড়েছে আরো কয়েক গুণ। বাস, প্রাইভেট কার, এমনকি রিকশায় চলতে গিয়েও নগরবাসীর রীতিমতো নাভিশ্বাস, ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।
গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী থেকে মালিবাগ-রামপুরা-বাড্ডা হয়ে কুড়িল বিশ্বরোডের সঙ্গে সড়কটির সংযুক্ত হয়েছে। এটি রাজধানীর ব্যস্ততম সড়ক। সড়কটির দুই পাশে খোঁড়াখুঁড়ি কাজ করার ফলে প্রতিনিয়ত যানজটের কবলে পড়েন যাত্রী ও পথচারীরা। নতুন বাজার থেকে শুরু করে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত অধিকাংশ সড়কেই খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া রামপুরা ব্রিজ থেকে মালিবাগ রেল-গেট মোড় পর্যন্ত সড়কটি বেহাল দশা। এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ব্যক্তিগত গাড়ি ও গণপরিবহন যাতায়াত করে। একই সড়কে মৌচাক-মালিবাগ রেলগেট উড়ালসেতুর কাজ চলছে। উড়ালসেতুর কাজের কিছু অংশ বাকি রয়েছে। ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাতায়াত করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও টঙ্গী, গাজীপুর, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন জেলার পরিবহন। খানাখন্দে ভরা ভাঙাচোরা এই সড়কটিতে চলাচলকারী যাত্রীরা তীব্র ঝাঁকুনি খান। এতে অনেকেই শারীরিক সমস্যায় ভোগেন। রাতের বেলা সড়কটিতে আলোক-স্বল্পতা এবং বড় বড় গর্তের কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
মৌচাক-মালিবাগ রেলগেট উড়ালসেতুর কাজ করার কারণে রাস্তাতেই রাখা হয়েছে নির্মাণসামগ্রী। তাই সড়কটি অনেকটাই সরু হয়ে গেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লেগে থাকে অনবরত যানজট। যাত্রীদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। দীর্ঘদিন ধরে উড়ালসেতুর কাজ হওয়া নিচের অংশের সংস্কারের কাজ হচ্ছে না। সংস্কার না হওয়া ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া সড়কের পাশে থাকা ড্রেনেজগুলো বর্তমানে পরিষ্কার না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কটি জলাশয়ে রূপ নেয়। ছোট-বড় গর্তগুলো পানিতে কানায় কানায় ভরে যায়। পানির মধ্য দিয়েই যাত্রীদের চলাচল করতে হয়। এতে যানবাহন ও পথচারী চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এ সড়কে উন্নয়নের জন্য কখনো ওয়াসা, কখনো সিটি করপোরেশন আবার কখনো বা অন্য সেবা সংস্থার কাজ চলছে। তবে এক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্য প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় নেই। ফলে কাজের গতি খুবই কম। এ অবস্থায় আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে লাগে কয়েক ঘণ্টা। ধুলোবালিতে যেন ওষ্ঠাগত প্রাণ। সেই সঙ্গে বৃষ্টিতে দুর্ভোগ বাড়ে কয়েক গুণ। আবার মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভারের নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হচ্ছে রাস্তার ওপরই। এ কারণে বড় বড় যানবাহন বিকল্প পথ হিসেবে বেছে নিচ্ছে অলিগলি। তবে সেখানেও নিস্তার নেই।
কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগেই রাস্তার গর্ত ভরাটের কাজ করছে। তবে তাতে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হচ্ছে না। কালক্ষেপ না করে দ্রুত সড়ক মেরামত ও সংস্কারকাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে নগরবাসী।
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মহবুব আলম বলেন, ঢাকা ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে মেরামত করার প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমানে যে অবস্থা আছে সেটাকে চলাচলের উপযোগী করার জন্য প্রতিনিয়তই ইমার্জেন্সি টিম দিয়ে গর্তগুলো ভরাট ও চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা করছি।
পিডিএসও/হেলাল