নিজস্ব প্রতিবেদক
‘ঢাকায় টিপটিপ বৃষ্টি হলে পানি জমবে না’
টানা ১০ দিন টিপটিপ বৃষ্টি হলেও ঢাকার কোথাও পানি জমবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী আমরা অক্ষরে অক্ষরে সব কাজ করছি। এই বছর বর্ষায় গত বছরের চেয়ে অবস্থা ভালো থাকবে। তবে ঘণ্টায় ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে একটু জলজট হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। আজ সোমবার সকালে ঢাকা ওয়াসার কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে ‘আসন্ন শুষ্ক মৌসুমে পানি সরবরাহে ঢাকা ওয়াসার প্রস্তুতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তাকসিম এ খান এ কথা বলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসান ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আক্তারুজ্জামান প্রমুখ।
তিনি বলেন, কোথাও যেন তিন ঘণ্টার বেশি পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। ঢাকা শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা কাজ করছি। তারপরও আমরা সেচ দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব পানি অপসারণ করছি।
তাকসিম এ খান বলেন, ঢাকা শহরে একসময় ৬৫টি খাল ছিল, ইতিহাস তাই বলে। আমরা এখন ২৬টি খাল দেখছি। খালের তো অস্তিত্বই নেই। যদি ৬৫টি খাল আর ৫টি নদী থাকত, তাহলে তো জলজট নিয়ে কথাই বলতে হতো না।
খাল দখলে ওয়াসার যোগসূত্র রয়েছে এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে এমডি বলেন, আমি শতভাগ অস্বীকার করছি, খাল দখলে ওয়াসার কেউ জড়িত নয়। এটা এত উপরে যে, জড়িত থাকতে হলে আমাকে বা আমার লেভেলের কাউকে জড়িত থাকতে হবে। খাল দখল কোনো চুনোপুঁটির কাজ নয়। তারপরও যেভাবেই হোক খাল দখল হচ্ছে।
তাকসিম এ খান বলেন, ২০০৫ সালে ঢাকা জেলা প্রশাসন খালগুলোকে আমাদের অধীনে দেয়। বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে খালে পাড় বেঁধে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করতে কাজ করছি। এখন পর্যন্ত ১৩টি খালের পাড় বাঁধানো হয়ে গেছে। খালের পাড় না বেঁধে যতই উচ্ছেদ করি না কেন লাভ হবে না। আমরা খালের ব্যাপারে কাউছে ছাড় দিইনি, দেবও না। রাজধানীতে জলজট হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মূলত ১২ শতাংশ জলাভূমি থাকার স্থানে ২ শতাংশ জলাভূমি রয়েছে। শহরের অধিকাংশ মাটি কার্পেটিং করা হয়েছে এবং শহরের নিম্নাঞ্চল ভূমিদস্যুদের দখলে চলে গেছে। এসব কারণে ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করা কিছুটা অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
পানি সমস্যা নিয়ে ওয়াসার এমডি বলেন, পানি ব্যবস্থাপনা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির তেমন কোনো সমস্যা হবে না। রাজধানীতে পানির সঙ্কট নেই, যেটা আছে পকেট সমস্যা (কয়েকটি পয়েন্টে)। আর সেই পকেট সমস্যা মোকাবিলা করার মতো প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
তিনি বলেন, ২ থেকে ৫ শতাংশের জন্য বলা যাবে না পানির সঙ্কট আছে। ঢাকা শহরে পানির খুব সমস্যা নেই। সাভারের ভাকুর্তা ওয়েকফিল্ড থেকে আগামী দুই মাসের মধ্যে পানি আসা শুরু করলে পানি সমস্যা থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, রাজধানীর সব জোনে গ্রাহক সমস্যা এবং অভিযোগ নিষ্পত্তি রোধে কলসেন্টার ওয়াসা লিংক ১৬ হাজার ১৬২টি চালু আছে। পদ্মা জশলদিয়া পানি শোধনাগার থেকে আগামী ডিসেম্বর থেকে পানি আসা শুরু করবে। এদিকে মেঘনা নদী থেকে পানি আনার যে প্রকল্প রয়েছে তা বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে।
পিডিএসও/রানা