নিজস্ব প্রতিবেদক
মশক নিবারণী দফতরেই মশকের চাষবাস
রাজধানীর লালবাগের ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পাশের একটি দোতলা ভবন। প্রাচীর ঘেঁষে গাড়ির গ্যারেজ, সেখানে ছড়িয়ে আছে অব্যবহৃত যন্ত্রাংশ, বাউন্ডারির ভেতরেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে পানি ভরা অনেকগুলো ড্রাম, চারপাশের পরিবেশ স্যাঁতসেঁতে, নোংরা। সেখানেও জমে আছে বৃষ্টির পানি। তার সঙ্গে পলিথিন ও কাপড়ের টুকরা, তরকারির খোসা, পশু-পাকির হারগোর ও গৃহস্থালির আবর্জনা। ছাদে অর্ধেক কাটা ড্রামে লাগানো হয়েছে ফুলগাছ, গাছের গোড়ায় জমে আছে পানি। পরিবেশটা মশার লার্ভাসহ বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গের বংশবিস্তারের খুবই উপযোগী। এমন দৃশ্যই দেখা গেছে ‘ঢাকা মশক নিবারণী দফতর’ ভবনে।
ভবনটিতে মানুষের যাতায়াত নেই বললেই চলে। প্রবেশের গেটিও সব সময় বন্ধ থাকে। প্রাচীর ঘেঁষে রয়েছে বেশ কয়েকটি গ্যারেজ। কয়েকটি গ্যারেজ মালিক জানিয়েছেন, এখানে গত তিন মাসে দুইবার ওষুধ ছিটানো হয়েছে। সচীন মোটর ওয়ার্কশপে কর্মরত সচীন, জয়নাল, মামুন ও উকিল জানান, বিভিন্ন গ্যারেজে ৬০ জনের মতো কর্মী কাজ করছেন।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়িচালক আবুল খায়ের জানান, এখানকার গুদাম থেকে প্রতি সপ্তাহে ১০টি করে মশক নিধনের ওষুধভর্তি ড্রাম দুই সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে নিয়ে যায়। সেগুলো খালি হয়ে আবার এখানেই আসে। প্রতি সপ্তাহে পরিত্যক্ত ১০০টি ড্রাম এখানে জমা হয়। খালি ড্রামগুলো সরালে পরিবেশটাও সুন্দর হতো বলে জানান তিনি।
ঢাকা মশক নিবারণী দফতর সূত্রে জানা যায়, এই অফিসের জনবল কাঠামো অনুসারে ৩৯৬ কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা। বর্তমানে প্রায় ১০৫টি পদ শূন্য রয়েছে। দফতরে ২৯১ জন কর্মী কাজ করছেন। এর বেশির ভাগই দুই সিটি করপোরেশনের কর্মী। জনবল কাঠামো অনুসারে ৩৪০ জন ক্রু থাকার কথা থাকলেও আছেন ২৬১ জন, তাদের সবাই সিটি করপোরেশনের মশা ছিটানোর স্প্রে মেশিন পরিচালনা করেন। ক্রুদের তদারকির জন্য সুপারভাইজারের পদ আছে ৩৪টি। লোক আছে ১৯ জন। বাকি ১৫টি পদ খালি আছে। ছয়টি ইনসেক্ট কালেক্টর (আইসি) পদ থাকলে কাজ করছেন চারজন। দুই করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে কাজ করেন তারা। তবে বেতন-ভাতা পরিশোধ করে এই দফতর।
মশক নিবারণী দফতরের কোষাধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন বলেন, দুই সিটি করপোরেশন মশক নিধনের ওষুধ কিনে এই গুদামে মজুদ রাখে। ওষুধ ব্যবহারের পর ড্রামগুলো এখানে রাখা হয়। পরিত্যক্ত এসব ড্রামে বিষক্ত পদার্থ থাকায় বারবার সিটি করপোরেশনকে বলার পরও তা সরাচ্ছে না।
পিডিএসও/হেলাল