শুভ জন্মদিন স্বপ্নের নায়ক
বাংলা চলচ্চিত্রের ক্ষণজন্মা কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহ । আজ ১৯ সেপ্টেম্বর এই কিংবদন্তি নায়কের ৪৬তম জন্মবার্ষিকী। দেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময় ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের জকিগঞ্জের দারিয়া পাড়ায় নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা কমর উদ্দিন চৌধুরী ও মাতা নীলা চৌধুরীর পরিবারের বড় ছেলে সালমান। যদিও তার পারিবারিক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন কিন্তু চলচ্চিত্র জীবনে তিনি সবার কাছে ‘সালমান শাহ’ বলেই পরিচিত ছিলেন।
সালমান শাহের মিডিয়ায় পদার্পন হয় হানিফ সংকেতের হাত ধরে। মিউজিক ভিডিও দিয়ে শুরুটা হলেও কাজ করেন বিজ্ঞাপন চিত্র ও নাটকে। কিন্তু দেশের চলচ্চিত্র জগতে সালমানের আগমন এক সত্যিই বিস্ময়কর। সালমান শাহ অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ১৯৯৩ সালের ২৫ মার্চ দেশের পেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। সোহানুর রহমান সোহানের পরিচালনায় সালমানের বিপরীতে অভিনয় করেন সে সময়ের জনপ্রিয় মডেল মৌসুমী। স্বপ্নবাজ নায়ক হিসেবে সালমানের পথ চলা শুরু হয়। বক্স অফিসে হিটের তালিকায় কেয়ামত থেকে কেয়ামত।
প্রথম ছবিতেই বাংলাদেশের সিনেমা প্রেমীদের মন জয় করে নেন প্রিয় নায়ক। এরপর ‘অন্তরে অন্তরে, স্নেহ, দেনমোহর, তুমি আমার (এই চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মত সালমানের বিপরীতে কাজ করেন শাবনূর), সেই থেকে জুটি হয়ে কাজ করেন ‘সুজন সখি, বিক্ষোভ, স্বপ্নের ঠিকানা, মহামিলন, বিচার হবে, তোমাকে চাই, স্বপ্নের পৃথিবী, জীবন সংসার, চাওয়া থেকে পাওয়া, প্রেম পিয়াসী, স্বপ্নের নায়ক, আনন্দ অশ্রু, বুকের ভিতর আগুন সহ মোট ১৪ টি চলচ্চিত্র। এছাড়া অন্যান্য মিলে সর্বমোট ২৭ টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন সালমান শাহ্।
মাত্র ৩ বছর ৫ মাস ১২ দিনে ২৭ চলচ্চিত্র। কিন্তু বেশ শক্ত একটা জায়গা করে নিয়েছিল এ অভিনেতা। শুরুটা মৌসুমীর বিপরীতে হলেও কাজ করেন শাবনূর, শাবনাজ, লিমা, বৃষ্টি, শিল্পী ও শ্যামা সাথে। এদের মধ্যে শাবনূরের সাথেই ২৭ টি চলচ্চিত্রের ১৪ টিতে কাজ করেন। দেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে আব্দুর রহমান ও নায়ক রাজ রাজ্জাকের পরেই সালমান একমাত্র নায়ক যিনি সর্বমহলে তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে হয়ে উঠেছিলেন তরুণদের স্টাইল আইকন, তরুণীদের স্বপ্নের নায়ক। এতো কিছুর পরও কখনও পারিশ্রমিকের হিসাব কষতে বসেন নি ।
রহস্যজনকভাবে ১৯৯৬ইং সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহের মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুরহস্য পুরোপুরি উন্মোচন না হলেও সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রিয়জনদের অভিযোগ। বিদায়ের ২১ বছর পরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টেলিভিশনের প্রতিবেদন দেখলে বোঝা যায় কতটা জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন এ নায়ক। মানুষ এখনো তাকে নায়ক হিসাবেই মনে করেন। তাইতো সবার প্রিয় হয়ে সালমান এখনো ২১ বছর আগের মতোই প্রাণবন্ত, উজ্জ্বল এক নক্ষত্র হয়ে আছেন বাংলা চলচ্চিত্রে।
পিডিএসও/তাজ