reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২১ জুলাই, ২০১৮

নারী পুরুষ সম্পর্কের গভীরতা ও জটিলতা কি দেখাতে পারলো ‘গহীন হৃদয়’?

মধ্যবয়স ছুঁয়ে ফেলা ভাস্কর (দেবশঙ্কর) টিপিক্যাল বাঙালি। অন্তত স্ত্রী সোহিনীর (ঋতুপর্ণা) মতে তার স্বামী ইমোশনলেস, আন-রোম্যান্টিক। বিছানায় তেমন সড়গড় নয়। যে শারীরিক উত্তেজনা আনন্দ অনুভূতি সে পায়, তা স্বামীরই বন্ধু অনুপমের (কৌশিক) সহচর্যে। তাই প্রেমিকের ঘরের ছবিটাই তার কাছে একসময় মনে হয় মনের চাবি। যখন ইচ্ছে হয় দরজা খুলে ঢুকে যায় অনুপমের বিছানায়। শরীরী খেলাকেই সে মনে করে ভালোবাসা।

কিন্তু বাস্তব জীবন যে অনেক কর্কশ আবার রোম্যান্টিক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে শারীরিক উত্তাপের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক নির্ভরতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া, একে অপরের প্রতি দায়িত্ববোধ, হয়তো বা কিছু অনুকম্পাও জড়িয়ে থাকে। এটাকেই কি ভালোবাসা বলে?

অভ্যাস কখনও কখনও দুর্বল করে দেয় মানুষকে। যেমন সোহিনীকে সংসার রোগে আক্রান্ত স্বামী ভাস্করের প্রতি দুর্বল করে দেয়। ধীরে ধীরে স্বামী হয়তো মৃত্যুর দিকেই এগোচ্ছে। কিন্তু এমন অবস্থায় ডিভোর্সের কথা আর বলে উঠতে পারে না। যদিও অনুপম সেটাই চায়। শেষপর্যন্ত জীবনকে বয়ে যেতে দেয় দু’জনেই। সোহিনী ব্যস্ত হয়ে পড়ে শারীরিক প্রেমহীন সম্পর্কের অভ্যাসে। আর অনুপম চলে যায় বিদেশে। তার প্রথম ও প্রাক্তন স্ত্রী ও মেয়ের কাছে। স্থিতাবস্থা বজায় থাকে।

পরিচালক অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় নারী পুরুষ সম্পর্কের গভীরতা ও জটিলতা নিয়ে ডিল করতে উৎসাহী। সেটা সেই ‘চারুলতা ২০১১’ থেকেই দেখে আসছি। ‘গহীন হৃদয়’ ত্রিকোণ প্রেমের গল্প। বাংলা সিনেমায় নতুন কিছু নয়। কিন্তু তার নির্মাণ কৌশলে কুশলী ব্যবসায়িক বুদ্ধির পাশাপাশি সিনেমার প্রয়োগশৈলীর উপযুক্ত ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। তাই ছবিতে তিনি পুরুলিয়ার ছৌ নাচ এবং জাপানি কাবুকি নাচের মেকআপ ব্যবহার করে প্রধান তিনটি চরিত্রের মানসিক অবস্থা প্রকাশ করতে যে পদ্ধতি নিলেন সেটা খুবই আরোপিত লাগল। মনে হচ্ছিল ‘আর্টি’ হয়ে ওঠার আরোপিত প্রয়াস। ওই ‘নাটুকেপনা’ না থাকলেও চলত।

এত কিছু করা সত্ত্বেও দর্শকের কাছে সোহিনীর মানসিক যন্ত্রণা এবং অনুপম ও ভাস্করের অসহায় অবস্থাটি কি দাগ কাটতে পারল? প্রেমিক প্রেমিকা কি একজনের স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যু কামনা করতে পারে? পারে না। অনুপম বা সোহিনীও সেটা পারেনি। ভালবাসাহীন সংসারে অভ্যস্তই হতে হয়েছে। স্থিতাবস্থা বজায় রাখতেই হয়েছে।

‘গহীন হৃদয়’ ছবির মূল আকর্ষণ ঋতুপর্ণা ও দেবশঙ্করের অভিনয়। সোহিনী হিসেবে ঋতুপর্ণা চরিত্রটির দ্বিধাপূর্ণ অবস্থাটি সুন্দরভাবেই প্রকাশ করেছেন। শেষ পর্বে কৌশিকের হাতে ঘরের চাবিটি তুলে দিয়ে তার ‘যাই’ বলাটা ভালো। কৌশিক ত্রিকোণের সূক্ষ্মকোণ হয়েই রইলেন। শংকর চক্রবর্তী, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সোহাগ সেন, সুমন্ত মুখোপাধ্যায়, দেবলীনা দত্তরা যে যার ভূমিকায় শুধুই স্বচ্ছ্বন্দ। বাড়তি কোনও মাত্রা যোগ করেননি। সুযোগও ছিল না।

পিডিএসও/রিহাব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
গহীন হৃদয়,নারী-পুরুষ,সম্পর্ক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist