তুহিন খান নিহাল
মুখোমুখি
‘দর্শকদের চাহিদা বিবেচনা করে কাজ করি’
ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু হলেও নিয়মিত কাজ করছেন ছোটপর্দায়। ‘গ্যাংস্টার রিটার্নস’ শিরোনামের একটি সিনেমায় অভিনয় করলেও এরপর আর কোনো সিনেমায় দেখা যায়নি। সম্প্রতি তার সঙ্গে কথা বলেছেন তুহিন খান নিহাল
বর্তমান ব্যস্ততা
বর্তমান ব্যস্ততা পুরোটাই ঈদের নাটককে ঘিরে। মাসের প্রায় ৩০ দিনই শুটিং করতে হয়। অন্যদিকে বেশ কয়েকটি ধারাবাহিক চলছে। সিঙ্গেল নাটকের কারণে ধারাবাহিকে তেমন সময় দিতে পারি নাই, তাই সে কাজগুলোর চাপ আছে।
অপূর্বকে বরাবরই রোমান্টিক চরিত্রে বেশি দেখা যায়
আমি শুধু রোমান্টিক চরিত্রে নয়, দর্শকদের চাহিদা বিবেচনা করেই কাজ করি। আমার ভক্তরা সর্বদা আমাকে রোমান্টিক ইমেজেই দেখতে চান। যখন কোনো নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করি, তখন অনেকেই বলে ভাইয়া আমরা আপনাকে এ ধরনের চরিত্রে দেখতে চাই না। প্রচুর কথা শুনি। কারণ, ভক্তদের রেসপন্স যে কারো থেকে আমি একটু বেশিই পাই। তাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারব।
সিনিয়র ও নতুনদের সঙ্গে কাজ করার পার্থক্য
সিনিয়রদের এবং নতুনদের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো অভিজ্ঞতা। আর এ অভিজ্ঞতার কারণে সিনিয়রদের সঙ্গে কাজ করাটা অনেক সহজ হয়। নতুনদের অনেক কিছুই বুঝতে সময় লাগে। তবে নতুনদের অনেকে ভালো কাজ করছে। মোট কথা, পার্থক্যের জায়গাটা অভিজ্ঞতাই।
পরিচালনা বা প্রযোজনায় আসার ইচ্ছে
নাটক নির্মাণে নিয়মিত হওয়ার ইচ্ছে থাকলেও কাজের ব্যস্ততার কারণে সেটা আর সম্ভব হয়ে উঠছে না। তবে শখের বসে সাত বছর আগে ‘ব্যাকডেটেড’ নামে একটি নাটক পরিচালনা করেছিলাম। আরো বছর কয়েক যাক, দেখি কী হয়। পরিচালনায় এলেও প্রযোজনায় আসার কোনো ইচ্ছে নেই আপাতত।
নতুন কোনো সিনেমায় কাজ করার পরিকল্পনা
একটি সিনেমায় কাজ করেছিলাম, সামনে আরো কাজ করার ইচ্ছে আছে। ‘গ্যাংস্টার রিটার্নস’ ছবিতে প্রথম কাজ করা হিসেবে খারাপ সাড়া পাইনি, বেশ ভালোই সাড়া পেয়েছিলাম। আমার ভক্তরাও আমাকে নিয়মিত ছবিতে দেখতে চান। এ বছরে একটা ছবিতে কাজ করার কথা রয়েছে। এখনো কথা চলছে, সাইনিং করা হয়নি। তাই পুরোপুরি না আগানো পর্যন্ত বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। যদি ব্যাটে-বলে মেলে, চরিত্র ভালো হয়, গল্প ভালো হয়, তবেই করব। আর কনফার্ম হয়ে গেলে অবশ্যই জানাব।
ক্যারিয়ারের অপূর্বর প্রাপ্তির জায়গাটা কেমন
প্রাপ্তি অনেক কিছু, লাখো-কোটি মানুষের এত এত ভালোবাসা। এটা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। যখন কোনো মহিলা বলে, তোমাকে দেখলে মনে হয় তুমি আমার ছেলে। অথবা বয়স্ক কোনো ভদ্রলোক মাথায় হাত দিয়ে বলে, বাবা তোমার নাটক আমি দেখি। তোমার জন্য অনেক দোয়া করি। আবার অনেকে বলে, ভাইয়া আপনাকে আমরা ফলো করি। এ থেকে একজন অভিনেতার বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে। দর্শকদের ভালোবাসাই আমার প্রাপ্তি। আর এই অনুপ্রেরণা থেকেই সর্বদা ভালো কিছু করার চেষ্টা করি।
সাম্প্রতিক সময়ের নাটকের মান
আমাদের দেশের নাটকের গল্প, এডিটিং সবকিছু আপডেট হচ্ছে এবং মানটাও ভালো হচ্ছে। ইদানীংকালে নাটক ও গল্পের মান অনেক বেড়েছে। এর জন্য অনলাইনকে ধন্যবাদ। আগে আমরা বুঝতাম না। মানুষ আউটডোরে গেলে কাছে এসে ভালো-মন্দের কথা বলত। এখন ইউটিউবে একটা নাটক দেখলেই বোঝা যায় নাটকটির নেগেটিভ ও পজেটিভ সাড়া কেমন। মানুষ কমেন্টস করে তাদের মতামত জানাচ্ছে। যার কারণে দর্শকরা নানা ভুল ধরিয়ে দিচ্ছে, ফলে নির্মাতা ও রাইটাররা আগের চেয়ে বেশি সচেতন হচ্ছে।
অনেকের ধারণা, আপনি খুব মুডি
একদমই না। অনেকে হয়তো দূর থেকে আমাকে মুডি ভাবতে পারেন। কিন্তু তারা যখন আমার কাছে আসেন, আমার সঙ্গে কথা বলেন, তখন তাদের ধারণা পাল্টে যায়। আমি সবার সঙ্গে অনেক আন্তরিক। কারণ আমি মনে করি, একজন মানুষের ব্যবহারটাই সব। আর অহঙ্কার জিনিসটা আমার একদম পছন্দ না।
ব্যস্ততার মধ্যে পরিবারের সঙ্গে সময়
কাজের ফাঁকে এবং কাজের বাইরের সবটুকু সময় নিজের পরিবারকে দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে এতটাই ব্যস্ত থাকি, নিজেকে বা নিজের পরিবারকেও ঠিকমতো সময় দিতে পারি না।
পিডিএসও/তাজ