তুহিন খান নিহাল
মুখোমুখি
নাটকে দর্শক বেশি : নাঈম
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা এফ এস নাঈম। অভিনয়ের মুগ্ধতা ছড়িয়ে এরই মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন দর্শক হৃদয়ে। সময়ের ব্যস্ততম এই অভিনেতার সঙ্গে তার সমসাময়িক কাজের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন তুহিন খান নিহাল
ভালোবাসা দিবসের নাটকের সাড়া কেমন পেয়েছেন?
বলতে গেলে ভালো সাড়া পেয়েছি। কারণ এতে বিভিন্নভাবে ভালোবাসা প্রকাশের সুযোগ হয়েছে। কাজগুলো আমি খুব এনজয় করেছি। আর যারা দেখছে তারাও খুব ভালো বলেছে। আর দর্শকদের জন্যই তো আমাদের কাজ করা। দর্শকদের ভালো লাগাটাই একজন শিল্পীর সবচেয়ে বড় পাওয়া।
এত ব্যস্ততায় কাজের মান কি ধরে রাখতে পারছেন?
প্রত্যেক মানুষকেই তার কাজ নিয়ে ভাবতে হয়। সেটা যে পেশাই হোক না কেন। তবে সেই জায়গা থেকে আমরা যারা অভিনয় করি, তারা সব সময় কাজ নিয়ে নিয়মিত চিন্তাভাবনা করি। কীভাবে কাজের মানটা ধরে রাখা যায়। আর সেই মনমানসিকতা সব শিল্পীর রয়েছে এবং তা উচিত বলে মনে করি। তবে তেমন একটা প্রস্তুতির সময় পাই না, তবে সময় পেলে অবশ্যই চেষ্টা করি চরিত্রভেদে নিজের প্রস্তুতি নিতে।
নিজেকে উপস্থাপনের জন্য আপনার প্রস্তুতির দিকটা কেমন থাকে?
আমি সব সময় স্ক্রিপ্টটা যত্নসহকারে পড়ার পর নিজের চরিত্রকে প্রকাশ করার চেষ্টা করি। পাশাপাশি কাজের ক্ষেত্রে নিজের চরিত্রে ভিন্নতা আনতেও চেষ্টা করি। আর সে চেষ্টাকে সার্থক করার জন্যই নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করি। যার ফলে আমার পার্সোনালিটি থাকে। আর অন্যদেরও এ বিষয়ে সচেতন থাকা একান্ত প্রয়োজন। যদি কাজের আগ্রহের কথা বলি, তবে আমি যেকোনো গল্পে কাজ করতে রাজি নই। গল্প যদি ভালো হয় তাহলে প্রচুর কষ্ট করতে রাজি।
বর্তমান সময়ের নাটকের মান সম্পর্কে আপনার মতামত কী?
বর্তমানে আমাদের নাটকের মান খুবই ভালো। কারণ হিসেবে বলতে পারি, আমরা যারা শিল্পী রয়েছি সবাই চেষ্টা করি আমাদের সেরাটা দেওয়ার। আর সে কারণেই বাংলাদেশে নাটকের দর্শক সব সময়ই বেশি, এই কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
খণ্ড নাটকের তুলনায় ধারাবাহিকে আপনার কাজের পরিমাণ কম কেন?
ধারাবাহিক একটু কম করা হয়। কারণ, ধারাবাহিকে কাজ করতে একই লুকে অনেক দিন থাকতে হয়। একজন অভিনেতা হিসেবে যেহেতু অন্য কাজও করতে হয়। তাই ধারাবাহিকের লুকটা ধরে রাখা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই ধারাবাহিক নাটকে কাজ কম করা হয়। তবে এটিএন বাংলায় আগামী ১৩ মার্চ থেকে ‘মেঘে ঢাকা শহর’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটক শুরু হচ্ছে। যেটা লিখেছেন রুদ্র মাহফুজ ও পরিচালনা করছেন সাখাওয়াৎ মানিক। এ ছাড়া সামনে ‘ইডিয়েট’ নামে আরো একটি ধারাবাহিক আসছে।
দেশের চ্যানেলগুলোর দর্শক দিন দিন কমছে, এর কারণ কী বলে আপনি মনে করেন?
আমার মতে, দর্শক মোটেই কমছে না। বরং বলা যায়, অনেক চ্যানেলের কারণে দর্শক ভাগ হয়ে গেছে। ইদানীং প্রায় বাসায় বাচ্চারা বিকেল হলেই দুরন্ত টিভি দেখছে, এটা একটা ভালো দিক। অন্যদিকে সন্ধ্যার পর যখন বিভিন্ন চ্যানেলে নাটক প্রচার শুরু হয়, তখন দিনের তুলনায় দর্শক কয়েক গুণ বেড়ে যায়। অর্থাৎ দেশীয় নাটকগুলো এখনো মানুষ দেখছে। এ ক্ষেত্রে দর্শক কমেনি বরং বেড়েছে।
এখন ইউটিউব ভিউয়ের মাধ্যমে কাজের বিচার করা হয়, বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?
আগে ১২ কোটি ১৫ কোটি মানুষ টিভিতেই নাটক দেখত। হয়তো পরে সিডি কিনে বাসায় দেখত। সময় অনেকটা বদলে গেছে। পরিবর্তন এসেছে মাধ্যমে। তবে যে যেখানেই দেখুক, বরং দর্শকদের কাছ থেকে আমরা কী ধরনের সাড়া পাচ্ছি সেটাই বিবেচ্য বিষয়। কারণ, যারা একটি ভালো নাটক কিংবা মিউজিক ভিডিও টিভিতে দেখতে পারছেন না তারা পরে ইউটিউবে দেখছেন। এটা আমাদের জন্য ভালো। কিন্তু অনেকে নাকি বুষ্ট করে ভিউ বাড়িয়ে হিট হিসাব করে—সেটা ঠিক না।
সাহিত্যের ছাত্র হিসেবে ভবিষ্যতে লেখালেখির ইচ্ছা আছে কি না?
লেখালেখির ইচ্ছা আছে, যদিও সেভাবে সময় পাই না। তবে সময় পেলেই অল্পস্বল্প লেখার চেষ্টা করি।
অভিনয়ের পাশাপাশি আপনি সংসারে কতটুকু মনোযোগী?
যতটুকু থাকা দরকার ঠিক ততটুকু। তা ছাড়া নাদিয়াও একজন ভালো অভিনয়শিল্পী। সেও অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই যখন আমরা একসঙ্গে থাকি তখন দুজন মিলে ভালো থাকার চেষ্টা করি। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
পিডিএসও/তাজ