তুহিন খান নিহাল
‘এত খারাপ মানুষ আমি পাইনি’
২০১২ সালের লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারের প্রথম রানার-আপ প্রসূন আজাদ। এই প্রতিযোগিতার পর থেকেই মিডিয়ায় নিজেকে যুক্ত করেন তিনি। ভালোভাবেই শুরু হয় তার পথচলা। কিন্তু হঠাৎ করেই ঘটে ছন্দপতন। তার ওপর এক বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ডিরেক্টর গিল্ডস। তবে সবকিছু ছাপিয়ে গত বছরের অক্টোবরে তিনি আলোচনায় উঠে আসেন ডিভোর্সের খবরে। তবে এসব বেড়াজাল ডিঙিয়ে আবার কাজে ফিরেছেন। একান্ত আলাপচারিতায় প্রতিদিনের সংবাদ’কে জানিয়েছেন অনেক কিছু। প্রসুন আজাদের সেই আলাপচারিতার অংশবিশেষ নিয়েই এবারের আয়োজন-
এখন কী কী কাজ নিয়ে আপনার ব্যস্ততা?
প্রথমত, ‘করপোরেট’ নামের একটি নতুন ধারাবাহিক নিয়ে আছে এক ধরনের ব্যস্ততা। পাশাপাশি রহমতউল্লাহ তুহিনের ‘যখন কখনো’ ধারাবাহিকটি তো আছেই। অন্যদিকে শামিম ভাইয়ের ‘জামাই কাণ্ড’ নামে একটি ধারাবাহিক নাটকেও আমি যুক্ত। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর কাজের প্রতি আমি অনেক সিরিয়াস।
এক বছর নিষিদ্ধ ছিলেন, তবে ক্যারিয়ারে নিষিদ্ধকালীন সময়টা কেমন?
এটা নিয়ে আমার কোনো ঝামেলাই নেই। বরং ওই সময়টা আমার খুব ভালো কেটেছে। পেইন্টিংয়ে মনোযোগ দিয়েছিলাম। এ ছাড়া অনেক বই পড়েছি, সিনেমা দেখেছি। পাশাপাশি কয়েকটি সিনেমার কাজ করেছি। বলতে গেলে, আমার কাজ কখনো থেমে থাকেনি। অর্থাৎ ডিরেক্টর গিল্ড আমাকে খুব একটা ঝামেলায় ফেলতে পারেনি।
এখন কোন ছবির কাজ করছেন?
না, এখন কোনো ছবির কাজ নেই। তবে শফিকুল ইসলাম সোহেলের পরিচালনায় ‘ভোলা’ নামের একটি ছবিতে কাজ করেছি, যা প্রায় শেষের দিকে। তবে গানের শুটিং এখনো শেষ হয়নি। এই ছবিতে আমি একটি সাধারণ মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি। ছবিতে আমার ভাই থাকে বাপ্পী। গুলশানের আদি নাম ছিল ভোলা। আর সেখানকার জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন যারা তাদের অনেকেই সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত হন। মূলত এটা নিয়েই আমাদের স্টাডি।
দুই পর্দাতেই কাজ করছেন, কোন জায়গাটায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
সব জায়গাই স্বাচ্ছন্দ্যবোধের জায়গা। কিন্তু আমার পছন্দ বড়পর্দা। তবে অভিনয় যেখানে করতে পারি সেটাই আসলে কমপোর্টেবল।
চলতি বছরে নতুন কোনো ছবিতে দেখা যাবে?
কথাবার্তা চলছে। কিন্তু ফিল্ম পছন্দ হচ্ছে না। গল্প পছন্দ হলে হয়তো করা হবে। তবে আমাকে নিয়ে কাজ করবে এমন পরিচালক খুব কম। কারণ, আমার বিরুদ্ধে যেভাবে গুজব ছড়ায় তাতে চিন্তায় থাকেন তারা। অনেকেই মনে করেন আমি হয়তো ঠিকঠাক কাজ করব না। তবে যারা ভয় পায় তাদের বলতে চাই, আমি ঠিকঠাক কাজ করব, আমাকে নিয়ে টেনশন করার কিছু নেই।
মিডিয়ায় সেক্রিফাইস নামে একটি বিষয় চালু রয়েছে, আপনি এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন?
হ্যাঁ। কিন্তু আমি হাসিমুখে সেগুলো মোকাবিলা করেছি। আমি বলেছি, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি এত খারাপ মানুষ পাইনি, যারা আমাকে জোর করেছে।
আপনার বিয়ের খবরের আগেই দর্শক ডিভোর্সের খবর পেয়েছিল। সেটা কেন?
বিয়ের কথা প্রকাশ করতে আমার স্বামী আমাকে না করেছিল। কারণ সে পড়াশোনা করে। অন্যদিকে আমার বাবা রাজি ছিল না, ওকে পছন্দ করত না। এ জন্যই তখন কাউকে বিয়ের খবর জানানো হয়নি।
নাকি নিজের ক্যারিয়ারের জন্য বিয়ের খবর গোপন করেছেন?
আমার ক্যারিয়ারের কথা নয়, বরং আমি ওর ক্যারিয়ারের কথা ভেবেছি। আমি চেয়েছি ও পড়াশোনাটা শেষ করুক।
প্রেমের শুরুটা কীভাবে ছিল?
২০১৫ সালে আমি অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছিলাম ‘মৃত্যুপুরীর’ শুটিংয়ে। মালয়েশিয়াতে প্লেন চেঞ্জ হলো। আমার পাশের সিটে ও বসেছিল। সেখান থেকেই পরিচয়। আট ঘণ্টার কথায় প্রেম হয়ে গেছে। কিন্তু রিলেশন ছিল মাত্র দুই বছর।
বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?
আমাদের লং ডিসটেন্স রিলেশনশিপ। ও অস্ট্রেলিয়ায় থাকে, আমি বাংলাদেশে। আমার মনে হয়েছিল সে হয়তো অন্য কারো সঙ্গে আছে। আবার সে আমার বন্ধু-বান্ধবকে নিয়েও সন্দেহ করত। এ ক্ষেত্রে আমারও কিছু ভুল ছিল। আমাদের যোগাযোগে অনেক ঝামেলা ছিল। যেহেতু ও চাপ নিতে চাচ্ছে না। তাই একটা মানুষকে তো জোর করে রাখা যায় না। ও যখন ডিভোর্সের কথা বলল, তখন আমিও রাজি হয়ে গেছি।
ডিভোর্স হয়েছে কত দিন?
এখনো হয়নি। তবে হয়তো সে যখন বাংলাদেশে আসবে তখন হবে। যেকোনো দিন এসে হয়তো বলবে ডিভোর্স হয়ে গেছে।
পরিবার সাপোর্ট দিচ্ছে?
বাবা-মা চায় আমি কাজ করি। কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকি। বিয়ের কথা বলে, কিন্তু আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। তবে সে রকম কোনো লোক যদি আসে, যাকে দেখে আমি প্রেমে পরতে পারি তখনই বিয়ে হবে।
পিডিএসও/রিহাব