ঢাবি প্রতিনিধি
২০১৭-১৮ অর্থবছরে
ঢাবির ৬৬৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ৬৬৪ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার বাজেট ঘোষিত হয়েছে। নতুন ঘোষিত এই বাজেটে গবেষণা খাতে বরাদ্দ মোট বাজেটের ২ শতাংশ। এবং বেতন-ভাতা-পেনশনে খরচ হবে ৭৯ শতাংশ। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সিনেটের ২০১৭ সালের বার্ষিক অধিবেশনে বাজেট পেশ করবেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ কামাল উদ্দিন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. এনামুজ্জামান।
প্রতিবারের মত এবারও বাজেটের একটি বড় অংশ খরচ হবে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও পেনশন পরিশোধ করতে। বরাবরের মত এবারও বাজেটের আয়ের উৎস বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুদান ও নিজস্ব আয়। এবার ইউজিসি দিবে ৬০৮ কোটি ১০ লক্ষ টাকা আর বাকি অংশ আসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে। অভ্যন্তরীণ আয়ের উৎস হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আদায় করা ফি, দালান ও ভূসম্পত্তি থেকে আয় ও বিবিধ প্রাপ্তি।
বাজেট ঘেটে দেখা যায়, এবার ঘোষিত ৬৬৪ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকার বাজেট যা গতবার ছিল ৬৬৪ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। গত বছরের চূড়ান্ত সংশোধিত বাজেটের হিসেবে এবারের বাজেটের আকার গতবারের চেয়ে ৩ কোটি ৮ লাখ কম। সংশোধিত বাজেটে গতবার পরিমাণ বেড়ে হয় ৬৬৭ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও সাধারণ কার্যক্রম পরিচালনার আগামী এক বছরের ব্যয় হিসাব এ বাজেট। গত কয়েক বছরের বহুল আলোচিত গবেষণা খাতে এবার বরাদ্দের পরিমাণ ১৪ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ২ শতাংশ। বেতন-ভাতার জন্য এবার বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪১৭ কোটি ৫৯ লক্ষ ২২ হাজার টাকা। আর পেনশনের জন্য আলাদাভাবে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১০৬ কোটি টাকা। সে হিসেবে বেতন, ভাতা ও পেনশন দিতেই খরচ হবে মোট বাজেটের প্রায় ৭৯ শতাংশ।
অধিবেশনে অভিভাষণ দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বকীয়তা ও গুরুত্বের সঙ্গে অন্য কোন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাকার্যক্রমের তুলনা চলে না। দেশের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিই উচ্চশিক্ষার মূল লক্ষ্য। কিন্তু সেই বোধ ও অবস্থান থেকে আমরা সরে এসেছি। এখন আমাদের প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের মানসিকতা পরিবর্তন ঘটানো, যেন তারা যেকোন যেকোন সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়ে উঠে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কোন অবস্থাতেই বাণিজ্য কেন্দ্র নয়। এটি আমাদেও উপলব্ধি করতে হবে।
উপাচার্য আরও বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার মান রক্ষা একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটলে বা কোন ধরণের দূর্বলতাকে প্রশ্রয় দিলে তাতে যে ক্ষতি হবে তা সহজে পূরণ হবার নয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি বেরিয়ে আসে অদক্ষ পেশাজীবী গোষ্ঠী তাতে শুধু সমাজে নয়, জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসবে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে নতুন প্রজন্ম, আগামী দিনের মানুষ।
বাজেট উপস্থাপনের সময় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ কামাল উদ্দীন বলেন, বাজেট শুধু কতিপয় আর্থিক প্রস্তাব কিংবা সংখ্যাতাত্ত্বিক বিবৃতির সমষ্টি নয়। এটি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে এবং সম্পদ বন্টনের একটি যুক্তি নির্ভর বাস্তব পরিকল্পনা। একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন অর্থের। সেই অর্থেও জোগান কোথা থেকে পাওয়া যাবে এবং কীভাবে তার সদ্ব্যবহার হবে-বাজেট প্রণয়নের মাধ্যমে তা নির্ধারণ করার চেষ্টা করা হয়।
এ সময় তিনি সন্ধ্যাকালী প্রোগ্রামের আয়ের ৪০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের মধ্যে অন্তভূক্ত করে শিক্ষা ও শিক্ষকদের গুণগত মান-উন্নয়নে ব্যয় করারা করার প্রস্তাব করেন। একই সাথে নতুন খোলা বিভাগে তিন বছরের মধ্যে কোন বাণিজ্যিক বা সন্ধ্যাকালীন কোর্স চালু না করার প্রস্তাব করেন।
পিডিএসও/রানা