জাহাঙ্গীর হোসেন
পটুয়াখালী
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নির্যাতন ঘটনায়
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ : মহাসড়ক অবরোধ
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে আটকে রেখে চাঁদা দাবি ও নির্যাতনের ঘটনায় বিক্ষুব্দ সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের বাইরে দুমকি-বাউফল মহাসড়ক ৩ ঘন্টা অবরোধ করে রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা ৩ ঘন্টা এই বিক্ষোভ চলে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক ছাড়াও সব ক’টি গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। এতে ক্যাম্পাসের ভেতরে ও বাইরে আসা-যাওয়া লোকজনের মারত্মক সমস্যার সৃষ্ঠি হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের সমন্বয়ে একটি টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের নিভৃত করার চেষ্টা চালায়। বিষয়টি সমাধানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে তার অফিস কক্ষে পুলিশ, ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং প্রক্টরিয়াল বডির সাথে আলোচনা হয়েছে। এদিকে সহকারী পুলিশ সুপার (দুমকি-বাউফল সার্কেল) সাইফুল ইসলাম মিলন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এদিকে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তাৎক্ষনিকভাবে আসামীদের নাম ও সংখ্যা জানা যায়নি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোঃ নাঈম হোসেন জানায়, সভায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিধানে দু’দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। দাবি না মানলে অন্যথায় কঠোর আন্দোলন চলবে।
একাধিক বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাষ্টার্স শেষ বর্ষের পাঁচ শিক্ষার্থী পার্শ্ববর্তী বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া গ্রামে পায়রা নদীর তীরে ঘুরতে গেলে ফেরার সময় তাদের এক বান্ধবীর মায়ের সাথে দেখা হলে তিনিও ঐ ছাত্রদের সঙ্গে দুমকি ফিরছিলেন। এসময় নলুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদের ছেলে আজিমের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দুর্বৃত্তদল তাদের নদীর তীরে আটকে রেখে বিভিন্ন আপত্তিকর অযুহাত দেখিয়ে বেধম মারধর শুরু করে। কিছুক্ষন পর খবর পেয়ে আটক থাকা মহিলার স্বামী তাকে উদ্ধার করে। দুর্বৃত্তরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৭টি মোবাইল ফোনসহ নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদের উদ্ধার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ওই ছাত্র নির্যাতনের ঘটনায় দুমকি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শফিক খান, ছাত্রলীগ নেতা ফাইজুর রাব্বী, সজীব মৃধা, সোহেল, জহিরসহ কয়েকজন নেতার জড়িত থাকার বিষয় বিশ্বস্ত কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে পৌছালে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দিয়ে তাদের মোবাইল ফোনগুলো নিয়ে পালিয়ে যায় ঘটনাস্থল থেকে আড়ালে থাকা ছাত্রলীগ সভাপতি শফিক খানসহ অন্যান্যরা। প্রক্টর প্রফেসর ড. পূর্ণেন্দু বিশ্বাস বলেন, থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দিবাকর চন্দ্র দাস মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করেছেন। প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর মোহাম্মদ আলী জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমার অফিসে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। থানায় মামলা দায়ের করতে ইতোমধ্যেই প্রক্টর বাকেরগঞ্জ থানায় গিয়েছে। এ ঘটনায় জরুরী ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।পিডিএসও/রানা