জাককানইবি প্রতিনিধি

  ২০ নভেম্বর, ২০১৯

অবৈধ উপায়ে ভর্তির সুপারিশ আ.লীগ নেত্রীর

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ সেশনে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অবৈধ উপায়ে ভর্তির জন্য সুপারিশ করেন ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য লুৎফন নাহার বেগম লাকী।

বুধবার বেলা ১১টায় ভর্তি পরীক্ষা শুরু হলে লুৎফন নাহার বেগম লাকী অন্য কোনো উপায়ে ভর্তির উদ্দেশে সুপারিশ করতে প্রক্টর অফিসে যান। প্রক্টরিয়াল বডির একাধিক সদস্যের উপস্থিতিতে তিনি নিজেকে বারবার আওয়ামী লীগের নেত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন। নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নেতাদের নাম ব্যবহার করে আফিফা হুমাইরা যার রোল ১৪০৮৯ তাকে অবৈধ উপায়ে ভর্তির জন্য সুপারিশ করেন। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডির অন্যতম সদস্য, সহকারী প্রক্টর নজরুল ইসলাম তার কথার প্রতিবাদ জানালে ওই নারী অকথ্য ভাষায় পাল্টা জবাব দেন। প্রক্টর অফিস থেকে অবৈধ উপায়ে ভর্তির সুপারিশে ব্যর্থ হলে তিনি স্থান ত্যাগ করেন।

দুপুরে এক তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেটে গেলে দেখা যায়, আওয়ামী নেত্রী পরিচয় দানকারী লুৎফন নাহার বেগম লাকী, হাসিনা বিনতে হাকিম নামের একজন প্রতিবন্ধী নারীর সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।

পরবর্তীতে সংবাদ কর্মীরা লাকীর সাথে কথা বললে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের বড় নেত্রী পরিচয় দিয়ে বলেন, আমি যেহেতু আওয়ামী লীগের একজন নেত্রী, প্রধানমন্ত্রী, সৈয়দ আশরাফ, ওবায়দুল কাদেরের সাথে রাজনীতি করেছি, তাই মহিলা (হাসিনা বিনতে হাকিম) আমাকে অনুরোধ করেন যাতে সুপারিশের মাধ্যমে তার মেয়ে হুমায়রাকে ভর্তি করিয়ে দেই। এজন্য আমাকে নিয়ে আসে।

বাকবিতণ্ডতার কারণ জানতে চাইলে হাসিনা নামের প্রতিবন্ধী বলেন, লাকী আমার মেয়েকে ভর্তি করিয়ে দেবেন। এজন্য এক লাখ টাকা চুক্তি করেন এবং ইসলামী ব্যাংকের একটি ফাঁকা চেক তিনি আমার কাছ থেকে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে নেন। ভর্তি করিয়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে চেক নিয়েছেন, এখন চেক ফেরত চাইলে তিনি চেক নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।

পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ভর্তি পরিক্ষা চলাকালীন কর্তব্যরত র‍্যাব সদস্যরা দুইজন নারীকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির কাছে তুলে দেয়।

এই বিষয়ে প্রক্টর উজ্জ্বল কুমার প্রধান জানান, আওয়ামী লীগ নেত্রী পরিচয় দানকারী নারী সকালে প্রক্টর অফিসে এসে নানা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে অসাধু উপায়ে ভর্তির সুপারিশ করেছিলেন। আমরা তখন তাকে ফিরিয়ে দেই।

তিনি আরো বলেন, র‍্যাব সদস্যরা আমাদের হাতে তাদের তুলে দেওয়ার পরে স্থানীয় পুলিশসহ প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করি। ভর্তি পরীক্ষায় তার অসৎ উদ্দেশের বিষয়ে নিশ্চিত হই। যেহেতু প্রতিবন্ধী নারীর পক্ষ থেকে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আর্থিক লেনদেন নিয়ে চেক আদান প্রদানের বিষয়ে অভিযোগ তোলা হয়, তাই বিষয়টি গভীর তদন্তের জন্য এবং প্রয়োজনীয় আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ত্রিশাল থানা পুলিশের হাতে তুলে দেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ‘বি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ভর্তি জালিয়াতি চক্রের দুই সদস্যকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভর্তি জালিয়াতি,প্রতিবন্ধী,অবৈধ উপায়ে ভর্তি,আওয়ামী লীগ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close