বুয়েট ভিসিকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের চরম ক্ষোভ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামকে নিয়ে শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ফাহাদ হত্যার পর থেকে তাকে এখনো ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। সোমবার রাতে ক্যাম্পাসে আরবারের জানাজায় তিনি ছিলেন না। মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার মধ্যে তিনি সশরীরে এসে এ বিষয়ে জবাবদিহি না করলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবর যেখানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, সেই শের-ই বাংলা হলে তিনি যাননি। ভিসির প্রকাশ্যে না আসার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ। তার অনুপস্থিতিতে বিস্মিত হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকালে বুয়েট শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে এ বিষয়ে জবাবদিহি করার আহ্বান জানান। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র খুন হওয়া এবং এরপর উত্তাল ক্যাম্পাসে প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তির অনুপস্থিতি তাদের অবাক করেছে। এমন পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিলে ভিসির বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন তারা।
জানা গেছে, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার সহপাঠী থেকে শুরু করে সবাই। শিক্ষকরা এ হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন। শিক্ষক সমিতির নেতারা আজ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে সামিল হন। সকালে বুয়েটের শহীদ মিনারে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশকালে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে একমত।’
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে উপাচার্যকে মুঠোফোনে কল দেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাফর ইকবাল খান। তখন উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) কল রিসিভ করেন। তিনি জানান, উপাচার্য অসুস্থ। এজন্য ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না।
এদিকে বুয়েট ভিসির অবস্থান সম্পর্কে আজ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম অসুস্থ বলে এখনও শিক্ষার্থীদের কাছে যাননি, তবে তিনি যাবেন।
ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের নিজের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ডেকে নিয়ে ২০১১ নম্বর কক্ষে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পিটুনির সময় নিহত আবরারকে ‘শিবিরকর্মী’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালায় খুনিরা।
তবে আবরার কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে নিশ্চিত করেছেন তার পরিবারের সদস্যসহ সংশ্লিষ্টরা।
পিডিএসও/তাজ