বাকৃবি প্রতিনিধি
মশা দমনের জৈবিক পদ্ধতি
এবার মশা নিয়ন্ত্রণে মাছ!
বর্তমানে বাংলাদেশে ডেঙ্গু একটি ভয়াবহ অবস্থার রুপ নিয়েছে। আর এই ডেঙ্গুর প্রধান বাহক এডিস মশাকে নিধন করতে পারলে এ রোগের বিস্তার কমানো সম্ভব। যেহেতু এডিস মশা বদ্ধ পানিতে ডিম ছাড়ে তাই কোনোভাবে এই ডিমকে বিনষ্ট করতে পারলেই এডিস মশাকে নিধন করা সম্ভব হবে। আর পানিতে ‘মশাভুক মাছ’ (Mosquito Fish) ছাড়ার মাধ্যমে মশার ডিম নিধন সম্ভব বলে জানিয়েছেন বাকৃবির একদল গবেষক।
গবেষক দলের প্রধান ফিশারিজ ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদ জানান, ২০১৭ সালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে চট্টগ্রামের কিছু ড্রেনে মশার ডিম ভক্ষণে কয়েকটি মাছের দক্ষতা নিয়ে একটি গবেষণা করেছিলাম। গবেষণায় দেখা গেছে, মশার লার্ভি ভক্ষণে দেশীয় খলিশা, দারকিনা, জেব্রা ফিশ মসকিউটো ফিশের চেয়ে বেশি উপযোগী হলেও এরা নর্দমার নোংরা পানিতে বেশিদিন বাঁচতে পারে না। তাই নর্দমার পানিতে মশার লার্ভি নিধনে মসকিউটো ফিশ সবচেয়ে বেশি উপযোগী। মসকিউটো ফিশ প্রায় ১০ বছর আগে আমেরিকা থেকে অ্যাকুরিয়াম ফিশ হিসেবে দেশে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে দেশের মুক্ত জলাশয় এবং ড্রেনে এটি ছড়িয়ে পড়ে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় এডিস মশার লার্ভি ধ্বংস করতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের পাশের ড্রেনে (প্রায় ৭-৮ হাজার) মসকিউটো ফিশ অবমুক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের আয়োজনে এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. জসিমউদ্দিন খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. আজহারুল হক, প্রধান গবেষক অধ্যাপক ড. হারুনুর রশীদসহ মৎস্যবিজ্ঞান ও অন্যান্য অনুষদের শিক্ষকরা। এছাড়াও এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ শহরের বিভিন্ন ড্রেনে এ মাছ ছাড়া হবে।
ভিসি অধ্যাপক লুৎফুল হাসান বলেন, দেশের ডেঙ্গুর এই মারাত্মক পরিস্থিতিতে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে মশা নিধনের নতুন নতুন প্রযুক্তি প্রয়োগ করতে হবে। তেমনি একটি হলো মশা নিধনের বায়োলজিক্যাল পদ্ধতি অর্থাৎ মাছ দিয়ে মশার লার্ভিকে ভক্ষণ করানো। তাই দেশের সব বদ্ধ পানিতে এ মাছ ছাড়া হলে এই দুর্যোগ অনেকটাই মোকাবেলা সম্ভব।
পিডিএসও/হেলাল