আবু সাইদ খোকন, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ০৫ জানুয়ারি, ২০১৯

‘আমাদের কষ্ট কোনো দিন দূর হবেনা?’

বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের ঘটখালী গ্রামে ১৯৮৪ সালে গ্রামের সমাজ সেবক আমিন উদ্দিন সিকদার স্থানীয়দের সহযোগিতায় নারী শিক্ষার জন্য নিজের নামে একটি দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে মাদ্রাসাটি প্রতিবছর ভাল ফলাফল করায় ১৯৮৭ সালে সরকার মাদ্রাসটি এমপিওভুক্ত করে। ১৯৮৭ সাল থেকে মাদ্রাসাটি বরগুনা জেলার ও আমতলী উপজেলার মধ্যে নারী শিক্ষার জন্য বেশ সুনাম অর্জন করেছে। মাদ্রাসাটি ২০১৮ সালে বরগুনা জেলার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের পদক অর্জন করে। মাদ্রাসাটি আমতলী-পটুয়াখালী মহাসড়কের সিকদার বাড়ী বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। মাদ্রাসাটিতে একটি পাকা ভবন রয়েছে। কক্ষ সংকটের কারণে দাখিল ও আলিম পরীক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে হচ্ছে পালা বদল করে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের কষ্ট কোনো দিন দূর হবেনা? আমরা শ্রেনি কক্ষ ও বেঞ্চের অভাবে ক্লাশ করতে পারিনা।’

অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘একাডেমিক ভবনে তিনটি রুম রয়েছে। এক রুমে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা, অপরকক্ষে কম্পিউটার ল্যাব এবং তৃতীয় রুমে আলিম প্রথম বর্ষ ও ২য় বর্ষের ছাত্রীদের পাঠদান করানো হয়। একাডেমিক ভবন ছাড়া ৪টি টিনসেড ঘর রয়েছে। টিনের ঘরের অবস্থা খুবই খারাপ।’

টিনসেড ঘরে ক্লাশ নেওয়া যাচ্ছেনা। এর মধ্যেই আবাসিক ছাত্রীদের থাকতে হয়। তারপরও মাদ্রাসাটির ফলাফল সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। গত বছর জেডিসি পরীক্ষায় ৬৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাশ ও দাখিল পরীক্ষায় ৩৩ জন অংশগ্রহন করে শতভাগ পাশ করে। আলিম পরীক্ষায় ২২ জন অংশগ্রহন করে তাও শতভাগ পাশ করেন। শুধু ২০১৮ সালেই নয়, মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই উপজেলা ও জেলার মধ্যে ভাল ফলাফল করে আসছে।

উপজেলার ৩৮ টি মাদ্রাসার মধ্যে ২০১৮ সালে বছরের শ্রেষ্ঠ উপজেলা ও জেলার পদক ছিনিয়ে এনেছে মাদ্রাসাটি। বর্তমানে ভাল ফলাফল অর্জনের জন্য জেডিস, দাখিল, আলিম পরীক্ষার্থীদের বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে।

১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসাটিতে বর্তমানে ৬৭৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। মাদ্রাসাটিতে ২৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী ও ইবতেদায়ী ১ম শ্রেণি থেকে আলিম পর্যন্ত ৬৭৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০০২ সালে আলীম শাখা অনুমোদন দেয় মাদ্রাসা বোর্ড। ২০০৪ সাল থেকে প্রতিবছর ভাল ফলাফল করছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে আলিম শাখার ৬ জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হয়নি। তারা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এলাকার সাধারণ জনগন এ মাদ্রাসাটিকে উপকূলের ইসলামী নারী শিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপিট বলে থাকেন। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুস সালাম বলেন, অনেক কষ্ট করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হয়। মাদ্রাসাটিতে ৩/৪ টি ভবন প্রয়োজন। তিনি আরো জানান, আমতলী উপজেলার মধ্যে এ মাদ্রাসাটিতে বিজ্ঞান শাখা চালু রয়েছে। নারী শিক্ষার জন্য মাদ্রাসাটিতে ভবন নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আকমল হোসেন বলেন, নারী শিক্ষায় প্রতিষ্ঠানটি এলাকায় ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। মাদ্রাসাটিতে ভবনের খুব প্রয়োজন। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।

পিডিএসও/অপূর্ব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বরগুনা,মাদ্রাসা,কষ্ট,দুর হবেনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close