ঢাবি প্রতিনিধি

  ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

ঢাবিতে বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিনম্র শ্রদ্ধায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল সোয়া ৬টায় উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচির মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করা হয়।

দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকাল সোয়া ৬টায় উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গনস্থ কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গনস্থ স্মৃতিসৌধ ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গমন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ। এরপর সকাল সাড়ে ১১টায় শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভার শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠের মাধ্যমে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। এছাড়াও শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক ড. তাজিন আজিজ চৌধুরী, শহীদ অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন আহমেদের ছোট বোন অধ্যাপক ড. সাজেদা বানুসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতির নেতৃবৃন্দ।

আলোচনা সভায় উপাচার্য বলেন, এদেশকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই করেছিলেন পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের প্রধান রাও ফরমান আলী। তিনি জানতেন বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেছেন এসকল বুদ্ধিজীবীরা। এজন্য ২৫ শে মার্চ রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেট করা হয়। এ পরিকল্পনার চূড়ান্ত বাস্তবায়ন করা হয় ১৪ ই ডিসেম্বর। তারা এদেশেরই কিছু মানুষকে ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করে। তাদের বিভিন্ন দল-উপদলে অন্তর্ভুক্ত করে দেশকে মেধাশূন্য করার এ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র করেছে।

এবছর ভিন্ন অবয়বে স্বাধীনতা বিরোধীদের উত্থান ঘটেছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এবছর বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। কেননা এবছরের বিজয়ের মাসে আমাদের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী এবং শহীদ পরিবারের সদস্য, তারা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন যে, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার ছিলো, তারাই এখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। যারা পাকিস্তানের দোসর ছিলো। তারা এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী রাজনৈতিক দলের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এটা যেন পুরোনো বোতলে নতুন মদ। এবছর ভিন্ন অবয়বে, ভিন্ন ছত্রছায়ায় তাদের উত্থান ঘটেছে। আমাদের নতুন প্রজম্ম এ সকল দোসরদের উত্থানের অপচেষ্টাকে প্রতিহত করবে।

অধ্যাপক সামাদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ যারা দেখেছেন তাদের কাছে মুক্তিযুদ্ধ একটি বাস্তবতা। আর যারা দেখেনি তাদের কাছে এটি গল্পকাহিনী মাত্র। এজন্য নতুন প্রজম্মকে মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতা উপলব্ধি করার জন্য তাদের চিন্তন শক্তির উন্নতি করতে হবে। এসময় তিনি যুদ্ধাপরাধী এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

আলোচনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

পিডিএসও/অপূর্ব

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঢাবি,শ্রদ্ধা,বুদ্ধিজীবী,স্মরণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close