ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাবিতে ‘শিক্ষাবাজেট ২০১৮-১৯ প্রস্তাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা
বাজেটে শিক্ষাখাতে ২০ শতাংশ রাখার দাবি
আসন্ন জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে কমপক্ষে ২০ শতাংশ বরাদ্দ রেখে ' শিক্ষা বাজেট ২০১৮-১৯ প্রস্তাবনা ও সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা ' সভা করেছে শিক্ষাবিস্তারের জন্যে স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস। রোববার সকাল সাড়ে ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় এই বাজেট প্রস্তাবনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস এর আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ আরিফের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক এবং ঢাবির বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
সভায় অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, শিক্ষাখাতে যে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এ বিষয়ে আমরা সবাই একমত। কতটা বরাদ্দ বাড়ানো উচিত বা কতটা বাড়ানো সম্ভব এ সম্পর্কে এই বাজেট প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের আগে দেখা দরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে বাজেট বাড়িয়ে কোন কোন জায়গায় বিশেষভাবে বরাদ্দ করা দরকার।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পাঠ্যসূচী, পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তকে মৌলিক পরিবর্তন দরকার। টেক্সটবুক বোর্ড যে পাঠ্যসূচী, পাঠ্যক্রম এবং পাঠ্যপুস্তক তৈরী করে, এগুলোর সংস্কারের জন্যে অনেক টাকা দরকার এবং সে টাকা যদি সরকার বরাদ্দ দেয়, তবে উন্নতির দিকে যেতে পারবো আমরা।
তিনি বলেন, বাংলা মাধ্যমে যে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা, এটাকে আমরা মূলধারা মনে করি। ইংরেজি মাধ্যম প্রবর্তন করে এটাকে বিভাজিত করে দেয়া হয়েছে। এই জায়গায় আমাদের বিবেচনা করতে হবে, বাংলা মাধ্যমে শিক্ষার উন্নতির জন্যে, শিক্ষকদের উন্নতির জন্যে এবং ছাত্রবৃদ্ধির জন্যে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। ইংরেজি মাধ্যম নিয়ে সরকার অনেক মনোযোগী, সেখানে ব্যয় বাড়ানোর কথা আমরা বলবোনা। সেখানে ব্যয় বাড়ানোর দরকার নেই।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, গবেষণার জন্যে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। গবেষণার মধ্য দিয়েই নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি হয়। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ গবেষণা করা। কিন্তু সেইখানে রাষ্ট্র বরাদ্দ দিচ্ছেনা । অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এনডাউনমেন্ট ফান্ড বাংলাদেশের এক বছরের বাজেটের চাইতেও বেশি। শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের কারণেই তারা আজ এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যদি গণতান্ত্রিক, জঙ্গিবাদমুক্ত, মানবিক মূল্যবোধ, বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ চাই, সেই ক্ষেত্রে শিক্ষা আমদের প্রধান হাতিয়ার। সেই কারণে কমপক্ষে ২০ শতাংশ বরাদ্দ শিক্ষাখাতে করতে হবে। একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণে এর চেয়ে বড় বিনিয়োগ আর হয়না।
সভায় বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেন ফারুক আহমেদ আরিফ। প্রস্তাবনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৯০ হাজার ৩২৬ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার দাবি জানানো হয়।
পিডিএসও/রানা