তহিদুল ইসলাম, জাবি
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীকে পিটিয়ে হল ছাড়া ছাত্রলীগ নেতার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় এক সাধারণ শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দিয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের এক নেতা। এ সময় মারধরকারীর সঙ্গে থাকা এক ছাত্রলীগকর্মী ভূক্তভোগীর মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়।রোববার সন্ধ্যায় শহীদ রফিক-জব্বার হলে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত অভিষেক মন্ডল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। অপরদিকে মারধরের শিকার জিয়াউল হক নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় জিয়াউল হক হলের দোকানে নাস্তা করতে গেলে এক পর্যায়ে অভিষেক মন্ডলের সাথে দেখা হয়। এ সময় তিনি জিয়াকে ‘এখনো হলে আছিস কেন, তুই হলে কী করিস’ বলে মারধর শুরু করেন। মারধরের এক পর্যায়ে অভিষেকের সাথে থাকা যোবায়ের (সরকার ও রাজনীতি, ৪৫ ব্যাচ) জিয়ার কাছ থেকে ফোন ছিনিয়ে নেয়। এছাড়া মারধর শেষে অভিষেক জিয়াকে তাৎক্ষণিকভাবে হল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে জিয়া ফোন ফেরত চাইলে ফোন ফেরত না দিয়ে তাকে হল ছেড়ে দিতে বলে। পরে এক সিনিয়র শিক্ষার্থীকে দিয়ে ফোন ফেরত আনতে পাঠালেও ফোন ফেরত দেয়নি অভিযুক্তরা। ওইদিন রাতেই জিয়া হল ছেড়ে দেয়।
জিয়াউল হক বলেন, ‘আমি ৯ এপ্রিল অন্যান্যদের সাথে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিই। অভিষেক মন্ডল ওইদিন আমাকে সকলের সামনে সেন্ট্রাল ফিল্ডে মারধর করেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ পত্র লিখলেও আর দেওয়া হয়নি। গতকাল (রোববার) আমি বাড়ি থেকে ফিরে হলে উঠি। সন্ধ্যার দিকে হলের দোকানে নাস্তা করতে গেলে তিনি আমাকে মারধর করেন। আমার সঙ্গে থাকা ফোনটিও ছিনিয়ে নেন। আমি বারবার ফোন চাইলেও ফেরত দেননি। গতকাল (রোববার) সন্ধ্যায় আমি হল থেকে চলে এসেছি। শুনেছি আমি রুমে আছি কিনা এটা জানতে তিনি আজ (সোমবার) সকালে দুইজন জুনিয়রকে আমার রুমে পাঠিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত অভিষেক মন্ডল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘তাকে চড় থাপ্পড় দিয়েছি। বলেছি হলে থাকার দরকার নেই। সে নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। আর তার মোবাইল ফোন নেওয়ার মত কোনো ঘটনা ঘটেনি।’
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জুয়েল রানা বলেন, ‘আমি এখনো এ বিষয়টি সম্পর্কে জানিনা। এ রকম কোন ঘটলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীকে ডেকেছি। আগে ঘটনা জানি তারপর ব্যবস্থা নেব।’
পিডিএসও/রিহাব