এবার প্রাথমিক থেকে পাবলিক পরীক্ষাই তুলে দেয়ার দাবি
প্রশ্ন ফাঁস রোধে নানামুখী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় এখন থেকে আর এমসিকিউ পদ্ধতি থাকবেনা বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজার রহমান। আজ মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান। তিনি বলেন, এমসিকিউতে মনে করেন ৮০, ২০টা প্রশ্নের উত্তর টিক দিলেই হয়ে গেল। তো আগের যে ব্যবস্থা তা মন্দ ছিল তা কিন্তু না। আমরা আসলে চাইছি, টিক দিয়ে পরীক্ষা যেন না দিতে হয়। তবে বছরের মাঝখানে সরকারের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, অভিভাবকরা। এছাড়া এমসিকিউ বাতিল করে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ করা যাবেনা বলেও মনে করেন অনেকে। প্রসঙ্গত পিইসি পরীক্ষায় ৫০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতি চালু ছিলো। এখন থেকে ১০০ নম্বরেই লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, একের পর এক প্রশ্ন ফাঁস থেকে বাদ যায়নি প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরাও। গত বছরের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার প্রায় সব প্রশ্নই ফাঁস হয়ে যায়। এরপরই প্রশ্ন ফাঁস রোধে নড়েচড়ে বসে মন্ত্রণালয়। কিভাবে এই ফাঁস রোধ করা যায় তা নিয়ে বিভিন্ন মহল নানা সুপারিশ তুলে ধরে। পদক্ষেপ হিসেবে এমসিকিউ তুলে দেয়ার কথা বলা হয়। এমন অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় এখন থেকে আর এমসিকিউ বা নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন রাখা হবেনা বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী।
একজন অভিভাবক বলেন, প্রশ্নফাঁসের জন্য আরো অনেক পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে, তবে নৈর্ব্যক্তিক বাদ দিলে আমাদের বাচ্চাদের অনেক সমস্যা হবে। তারা পাশ করতে পারবে না। আরেকজন বলেন, অবশ্যই থাকতে হবে। এতে তাদের পুরো বই পড়া হবে। পদ্ধতি বাতিল করে নয়, দুর্নীতি বন্ধ করতে না পারলে সমস্যার সমাধান হবেনা বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।
অভিভাবকদের পাশাপাশি বর্তমান অবস্থায় অর্থাৎ চলতি শিক্ষাবর্ষের ৩ মাস চলে যাওয়ার পর সরকারের এমন সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরাও। তারা বলছেন, পরীক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন নয়, প্রশ্ন ফাঁস রোধে প্রয়োজন যথাযথ নজরদারি এবং আইনের সঠিক প্রয়োগ।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) অধ্যাপক ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল বলেন, যদি এমসিকিউ পরীক্ষাটা আমরা ঠিক করে নিতে পারতাম, তাহলে এটা থাকত। তবে যদি আমরা মনেই করি যে এটা ঠিক করা যাবে না, তাহলে এভাবেই থাকবে। তবে সব থেকে ভাল সিদ্ধান্ত হচ্ছে যে, প্রাইমারিতে পাবলিক পরীক্ষাই তুলে দেয়া। শিক্ষাবিদ কায়কোবাদ বলেন, সারা পৃথিবীতে এমসিকিউ চালু রয়েছে। আমরা যদি রচনামূলক প্রশ্নে চলে যাই, সেক্ষেত্রে মূল্যায়নের অসংগতি দারুণভাবে থেকে যাবে।পিডিএসও/মুস্তাফিজ